ছাত্র সংগঠনের বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ছাত্রলীগ এখন চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি আর দখলবাজের সংগঠনে পরিণত হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের অপসারণ সেটাই প্রমাণ করে।
শিক্ষা দিবসের সমাবেশে এসব কথা বলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগরের সভাপতি রায়হান উদ্দিন।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে আন্দরকিল্লা মোড়ে শিক্ষা দিবস উপলক্ষে এই সমাবেশের আয়োজন করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নগর শাখা।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্র ফ্রন্ট নগরের সহসভাপতি দেব রঞ্জন দেব, সাংগঠনিক সম্পাদক মিরাজ উদ্দিন ও ইসরাত হক জেরিন।
বক্তরা বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি বিরোধী চলমান ছাত্র আন্দোলন প্রমাণ করেছে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংঠন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। সেই আন্দোলনের ঢেউয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষস্থানীয় পদে পরিবর্তন করতে হয়েছে।
শিক্ষা দিবসের তাৎপর্য্য কথা তুলে ধরে বক্তারা বলেন, ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে শহিদ হয়েছিল মোস্তফা, বাবুল ও ওয়াজিউল্লাহসহ নাম না জানা অনেকে। তৎকালীন সরকার ছাত্র জনতার অভ্যূত্থানেরমুখে শিক্ষানীতির বাস্তবায়ন স্থগিত ঘোষণা করে। বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ প্রতি বছর এই দিনটিকে শিক্ষা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
বক্তারা আরো বলেন, পরাধীন আমলে সামরিক স্বৈরাচার আইয়ুব সরকারের প্রণীত শিক্ষানীতির সারসংক্ষেপ যার মোদ্দাকথা হচ্ছে শিক্ষা হবে সাম্প্রদায়িক, পরিচালিত হবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে, যাদের টাকা আছে তারাই পড়তে পারবে, সবাই শিক্ষার অধিকার পাবে না, উচ্চশিক্ষার দ্বার সবার জন্য উন্মুক্ত হবে না, থাকবে না বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন। বর্তমানে স্বাধীন দেশে এখনও মানুষের সর্বজনীন শিক্ষার আকাঙ্খা অপূরিত রয়ে গেছে। বর্তমানে গোটা শিক্ষাব্যবস্থার ৯৫ ভাগ পরিচালিত হচ্ছে বেসরকারি উদ্যোগে। ১৯ হাজার মাধ্যমিক স্কুলের মধ্যে মাত্র ৩২৩ টি সরকারি, ২৮৯ টি মাত্র সরকারি কলেজ আর ১৪০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় মাত্র ৩৮ টি।
‘এ সকল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে প্রয়োজন প্রচুর অর্থ। অর্থাৎ গরিব মানুষের সন্তানদের পড়ানোর প্রয়োজন নেই, যার টাকা আছে, শিক্ষা কেনার সামর্থ্য আছে সেই পড়তে পাড়বে। একদিকে যেমন অবকাঠামোগত সংকট আবার অপরদিকে ধ্বংস করা হচ্ছে শিক্ষার মর্মবস্তু।’
সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। পরে শিক্ষা আন্দোলনের সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।