চট্টগ্রাম জহুর আহম্মেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রায় ৫ বছর পর ফিরল আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ফেরার ম্যাচটা রাঙিয়ে রাখল স্বাগতিকরা। জিম্বাবুয়েকে ৩৯ রানে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে জায়গা করে নিল বাংলাদেশ। আর এ হারে সিরিজ থেকে ছিটকে গেল জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের দেওয়া ১৭৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৩৬ রানে অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। ফলে তাদের ৩৯ রানে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যায় টাইগাররা।
এদিন নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে জিম্বাবুয়ে। ইনিংস ওপেন করতে নেমে কোনো রান না করে সাইফউদ্দিনের বলে ০ রানে সাজঘরে ফেরেন ব্রেন্ডন টেলর।
এরপর বল করতে আসেন কাপ্তান সাকিব। নিজের করা তৃতীয় বলে চাকাবভাকে ০ রানে বোল্ড করেন তিনি। সেখানেই মূলত জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামে। এরপর অনেকটা নিয়মিতভাবে উইকেট হারাতে থাকে তারা। চাকাবভাবের বিদায়ের পর উইকেটে আসেন শন উইলিয়ামস। তাকে শুরুতে ফিরিয়ে দেন প্রায় ২ বছর টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা শফিউল ইসলাম। ফেরার আগে উইলিয়ামস করেন ২ রান।
ততক্ষণে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৮ রান। এরপর বল করতে আসেন অভিষিক্ত আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। এসেই তিনি ফেরান মুতোম্বজিকে (১১)। তারপর রায়ান বার্লকে (১) ফেরান শফিউল। এরপর নিজের করা দ্বিতীয় ওভারে মাসাকাদজাকে এলভির ফাঁদে পেলে সাজঘরে ফেরান বিপ্লব।
বাংলাদেশের হয়ে শফিউল ৩ ও বিপ্লব ও মুস্তাফিজ নেন ২টি করে উইকেট। এছাড়া সাকিব ও সাইফউদ্দিন নেন ১টি করে উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে ভর করেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৭৬ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় বাংলাদেশ। ৪১ বলে সর্বোচ্চ ৬২ রান করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
এদিকে লিটন দাস আর অভিষিক্ত নাজমুল হাসান শান্তর ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু ৪৯ রানে প্রথম উইকেট পড়ার পর ৬৫ রানের মধ্যে পড়ে যায় ৩ উইকেট। এরপর দলের হাল ধরেন দুই ভায়রা ভাই মুশফিকুর রহীম আর মাহমুদউল্লাহ মিলে গড়ে তোলেন ৭৮ রানের জুটি। মূলত এ জুটির কল্যাণে বাংলাদেশ বড় স্কোর গড়ে।
তবে উড়ন্ত সূচনাকে খুব বেশিদুর এগিয়ে নিতে পারেননি অভিষিক্ত নাজমুল হোসেন শান্ত। ৯ বলে ১১ রান করে তিনি রিটার্ন ক্যাচ দিলেন কাইল জার্ভিসকে। যে সুযোগটা তিনি পেয়েছিলেন সেটিকে ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারেননি।
পরের ওভারে ফিরে গেলেন লিটন দাসও। ২২ বলে ৩৮ রান করা এই ব্যাটসম্যান ফাইন লেগে খেলতে গিয়ে বল তুলে দেন আকাশে। এমফোপুর বলে লিটনের ক্যাচ ধরেন মাদজিভা। ৪ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় এই রান করে ফিরে যান লিটন।
তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান স্রেফ নিজের উইকেটটা ছুঁড়ে দিয়ে এলেন। ইনিংসের ৭.২ ওভারে রায়ান বুর্লকে আলতো করে তুলে দিলেন লং অফে। সেখানে দাঁড়ানো ছিলেন শন উইলিয়ামস। খুব সহজেই ক্যাচটা তালুবন্দী করে নিলেন তিনি। দলীয় ৬৫ রানের মাথায় ৯ বলে ১০ রান করে ফিরে গেলেন সাকিব।
এরপর চতুর্থ উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ আর মুশফিকুর রহীম মিলে গড়ে তোলেন ৭৮ রানের এক অনবদ্য জুটি। দলীয় ১৪৩ রানের মাথায় ২৬ বলে ৩২ রান করে আউট হন মুশফিকুর রহীম। মাহমুদউল্লাহর গড়া ৬২ রানের ইনিংসে ছিল ৫টি ছক্কার মার। বাউন্ডারি মাত্র ১টি।
আফিফ হোসেন ধ্রুব ৭, মোসাদ্দেক হোসেন ২ রান করে আউট হন। সাইফুদ্দিন ৬ রানে অপরাজিত থাকেন। আমিনুল বিপ্লব ব্যাট হাতে মাঠে নামলেও কোনো বল মোকাবেলা করার সুযোগ পাননি। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৭৫ রান।
কাইল জার্ভিস ৩টি এবং ক্রিস্টোফার এমফোপু নেন ২ উইকেট।