বাঁশখালীর পুকুরিয়া ইউনিয়নের চরপুকুরিয়ায় নদী ভাঙনরোধে কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
পাউবো শঙ্খ নদীর পাড়ে তেচ্ছি পাড়ায় ভাঙন রোধে ২৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নদীতে ৭ হাজার ৮৭৭টি জিও ব্যাগ ফেলছে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তেচ্ছিপাড়া এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে নদী ভাঙা আতঙ্কের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আনন্দ উল্লাস লক্ষ্য করা গেছে।
জানা গেছে, বাঁশখালীর পুকুরিয়া ইউনিয়নের চরপুকুরিয়া মৌজায় তেচ্ছি পাড়া, হাড়িপাড়া, পূর্ব পুকুরিয়া, খোন্দকার পাড়া নিয়ে চারটি গ্রাম ছিল। কিন্তু পুরো চরপুকুরিয়া মৌজায় গত ৭০ বছর ধরে চারটি/পাঁচটি বাড়ি ভাঙতে ভাঙতে শঙ্খ নদীর গর্ভে চরপুকুরিয়া মৌজাটা বিলীন হয়ে গেছে। চরপুকুরিয়ার ৪০০ পরিবার এখন বসতভিটা ছাড়া। তারা আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায়।
সরেজমিন পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী অনুপম দাশ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু তাহের, দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের প্রতিনিধি উপ-সহকারী প্রকৌশলী লিপটন ওম, স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি ইউপি সদস্য ফরিদ আহমদ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আসহাব উদ্দিন।
ওই পাড়ার বৃদ্ধ আবুল কাশেম (৮২) জয়নিউজকে বলেন, আমার বুদ্ধির বয়সে আমাদের পাড়ায় শঙ্খ নদীর ভাঙনরোধে পাউবো থেকে কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। শঙ্খ নদীর পাড়ে কখনও এক বস্তা বালিও দেয়নি কেউ। শুধু সারাবছর মানুষ ঘর-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে।
একই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরিদ আহমদ জয়নিউজকে বলেন, আমাদের বাপ,দাদা-চাচাদের মুখ থেকে শুনতাম শুধু নদী ভাঙার দুঃখ। ৭০ বছর ধরে নদী ভাঙার গল্প শুধু মানুষকে কাঁদিয়েছে, নিঃস্ব করেছে। আমি দুইবার ইউপি সদস্য ছিলাম, অনেক আবেদন-নিবেদন করেও পাউবোর বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।
পুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসহাব উদ্দিন জয়নিউজকে বলেন, আমার ওয়ার্ড এটি নয়। আমি ওয়ার্ডে টানা ৬ বার ইউপি সদস্য ছিলাম। তারপর নির্বাচন করে চেয়ারম্যান হয়েছি। আমার পূর্বপুরুষের আমলে এই এলাকায় কখনও নদী ভাঙনরোধে বরাদ্দ পায়নি। প্রত্যেকবার আবেদন করলে পাউবো কর্তৃপক্ষ ভূমি জটিলতার অজুহাতে বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত করতো।
বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বহু দেন-দরবার করে এ প্রথম পুকুরিয়া তেচ্ছিপাড়ায় নদী ভাঙনরোধে পাউবোর জরুরি বরাদ্দ নিয়ে এসেছেন। এ বরাদ্দ পেয়ে এলাকার মানুষ খুশি। তবে এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি ওই এলাকায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণে সরকার যেন জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
স্থানীয় সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, তেচ্ছিপাড়া আমি পরিদর্শন করেছি বেশ কয়েকবার। এলাকাবাসী ভাঙনরোধে আপাতত জরুরি বরাদ্দ করা হয়েছে। শিগগিরই স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে। কাউকে নদী ভাঙার কবলে থাকতে হবে না।