লক্ষ্মীপুরে কমলনগরে যৌতুকের দাবিতে শারমিন আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী সুমন ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার চরলরেন্স এলাকা থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন পুলিশ।
নিহত শারমিন আক্তার একই এলাকার আজাদ হোসেনের মেয়ে।
পুলিশ জানান, শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী সুমনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন জয়নিউজকে বলেন, প্রাথমিকভাবে নিহত শারমিনের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে কি-না ময়নাতদন্ত শেষে বলা যাবে।
নিহত গৃহবধূর স্বজনরা জানায়, বছর খানেক আগে কমলনগর উপজেলার চরলরেন্স এলাকার আজাদ হোসেনের মেয়ে শারমিনকে একই এলাকার সুমন হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শারমিনকে যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল স্বামী সুমন হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। মঙ্গলবার রাতেও দুইজনের মধ্যে ঝগড়া হয়।
নিহতের ফুফা বশির উল্যাহ জয়নিউজকে জানান, যৌতুকের জন্য শারমিনকে শারীরিক নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মৃতদেহ রেখে পালিয়ে গেছে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন।
এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি করেন তিনিসহ আরো নিহতের স্বজনরা। তবে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
চরলরেন্স ইউপি চেয়ারম্যান আহসান উল্যাহ হিরণ জয়নিউজকে জানান, প্রায় এক বছর আগে পার্শ্ববর্তী গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে সুমন হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় শারমিন আক্তারের। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন শারমিন আক্তারকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতো।
বুধবার সকালে স্থানীয় লোকজন আবুল কাশেমের বাড়িতে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে বাড়ির লোকজন বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনার পর থেকেই নিহতের স্বামী সুমন হোসেন ও পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.ইকবাল হোসেন জয়নিউজকে জানান, গৃহবধূ শারমিনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তবে এটি হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী সুমনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।