চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি কনটেইনার ডিপোতে কম মজুরিতে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে কাজ করতো ৪৫ রোহিঙ্গা। একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ মালিকানায় এ ডিপোটি পরিচালিত হয়ে আসছে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাদের আটক করে পুলিশ। তবে স্থানীয়দের দাবি, ওখানে আরও রোহিঙ্গা ছিল, কিন্তু মালিক পক্ষের লোকজন তাদের রাতে কনটেইনারে করে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছে।
আটক রোহিঙ্গাদের উখিয়ায় থেকে মালিক পক্ষ স্থানীয় এক মাঝির মাধ্যমে এখানে নিয়ে এসেছিল বলে জানা যায়। রোহিঙ্গাদের এ এলাকায় নিয়ে আসার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খোঁজে অনুসন্ধানে নেমেছে পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ গোপন সূত্রে জানতে পারে একদল রোহিঙ্গা সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর মোল্লাপাড়া এলাকার মোবারক সওদাগরের কলোনির মোবারকের ঘরে অবস্থান করে পার্শ্ববর্তী একটি বেসরকারি কারখানায় কাজ করে যাচ্ছে। এই খবরের ভিত্তিতে সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিযান চালিয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোবারকের একটি ঘর থেকে তাদেরকে উদ্ধার করেন।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(তদন্ত) শামীম শেখ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জয়নিউজকে বলেন, উখিয়ার কুতুংপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে রোহিঙ্গারা সীতাকুণ্ডের কেশবপুর মোল্লাপাড়ার মোবারক সওদাগরের আশ্রয়ে আসে।
আমরা তার সুবিশাল একটি ঘর থেকে ৪৫ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছি। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাদের সবার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি (ইন্টেলিজেন্স) সুমন বণিক।
সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির আহমদ জয়নিউজকে বলেন, সোনাইছড়িতে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কয়েকশ মাস পূর্বে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা থেকে কয়েকজন রোহিঙ্গাকে আমরা আটক করে পুলিশে দিয়েছিলাম।
পুলিশ পরবর্তীতে তাদের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেন। মঙ্গলবার রাতে আটক ৪৫ রোহিঙ্গাকে বিএম কনটেইনার ডিপোর মালিক পক্ষ কারও মাধ্যমে এখানে কাজ করার জন্য নিয়ে এসেছিল। অল্প মজুরিতে তাদের কাজ করানো যায় সে সুযোগটি মালিক পক্ষ নিয়েছিল বলে মনে হচ্ছে।
বিএম কনটেইনার ডিপোর ম্যানেজার মো.খালেদ জয়নিউজকে বলেন, মো. মনসুর, মা এন্টারপ্রাইজ ও খাজা এন্টারপ্রাইজ নামে তিনটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লেবার ডেলিভারি দিয়ে থাকে। ওখানে কোনো রোহিঙ্গা আছে কী-না আমাদের জানা নেই।
তিনি বলেন কনটেইনার ডিপোতে কাজ করার সময় কোনো রোহিঙ্গা আটক হয়নি। কারখানার বাহিরে রোহিঙ্গা আটক হলে তার দায়দায়িত্ব কর্তৃপক্ষ নেবে কেন?
স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিন জয়নিউজকে বলেন, কয়েক বছর ধরে এখানে অনেক রোহিঙ্গা বসবাস করে আসছে। তারা কনটেইনার ডিপোতে নিয়মিত চাকরি করত। প্রথমে কয়েকজন থাকলেও এখন অনেক বেড়েছে। ৪৫ জন রোহিঙ্গা আটকের পর বিএম কনটেইনার ডিপোর ঠিকাদার মনছুর গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।