রামুতে নিভে গেলো সম্প্রীতির বাতিঘরের প্রদীপ। বৌদ্ধদের তৃতীয় সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু একুশে পদকপ্রাপ্ত পণ্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের পরলোকগমন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২.৫৫ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৫ সেপ্টেম্বর পণ্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় পণ্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের’র মরদেহ রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারে পৌঁছায়। এসময় শোকাহত হাজারো বৌদ্ধ নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের জনতা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং রাজনীতিবিদরা প্রবীণ এ বৌদ্ধ ভিক্ষুর মরদেহ’র প্রতি সম্মান ও ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
পৌনে তিনটার দিকে প্রয়াত ভিক্ষু’র মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুল্যান্সটি রামু বাইপাসে পৌঁছালে হাজারো বৌদ্ধ নারী-পুরুষের মাঝে শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
ফুলেল শ্রদ্ধায় রামু বাইপাস এলাকা থেকে বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুর মরদেহ উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের মেরংলোয়া গ্রামে রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারে নিয়ে আসা হয়। এ সময় বৌদ্ধরা প্রবীণ ধর্মীয় গুরুকে এক নজর দেখতে ভিড় করে বিহার প্রাঙ্গণে। বৌদ্ধ সম্প্রদায় ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী লোকজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় গুরুকে দেখতে যান।
পণ্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের’র মরদেহ রামু বাইপাস এলাকায় পৌঁছালে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ছুটে যান কক্সবাজার সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম, ফতেখাঁর কুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম ও রামুর রাজনীতি-সামাজিক সংঠনের নেতারা।
রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারের সাধারণ সম্পাদক রাজু বড়ুয়া জয়নিউজকে জানান, শুক্রবার বিকাল ৩টায় পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের’র মরদেহ বিহারে আনা হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টায় পূণ্যদান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রয়াত ভিক্ষুকে বিহারে প্রবেশ করানো হয়। এসময় বিহারের নির্ধারিত আসনে শয়নদান করা হয় প্রয়াত ভিক্ষুকে। শয়নদান অনুষ্ঠানে পূণ্যদান করেন, বিজয় রক্ষিত মহাথের, প্রিয়রত্ন থের, সারমিত্র মহাথের, সুনন্দপ্রিয় থের, করুণাশ্রী থের, প্রজ্ঞাবোধী থের, শীলপ্রিয় থের ও প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু।
প্রয়াত ভিক্ষুর আগামী ৯ অক্টোবর সংঘদান ও পেটিকাবদ্ধ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।