উত্তর চট্টগ্রামের রাউজান, ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রতিদিন লেখাপড়া করতে আসে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী। অথচ তাদের জন্য রয়েছে মাত্র ছয়টি বাস। আবার শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, একেতো বাস সংকট, তারওপর যে ছয়টি বাস দেওয়া হয়েছে সেগুলোও ব্যবহার অযোগ্য। দীর্ঘদিনের পুরনো এসব বাসকে নতুন করতে নিয়মিত রঙ করা হয়।
ওই ছয়টি বাস বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) থেকে ভাড়ায় নিয়েছে চবি কর্তৃপক্ষ। দৈনিক চুক্তিতে এগুলোর ব্যয়ভার বহন করে চবি প্রশাসন। জরাজীর্ণ এসব বাসের ব্যাপারে বিআরটিসি ও চবি প্রশাসনকে দফায় দফায় জানিয়ে কোনো সুফল পায়নি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
গত ২৯ আগস্ট সকালে সামান্য ঝাঁকুনিতেই ভেঙে যায় রাউজান রুটের একটি বাসের জানালার কাঁচ। ভাঙা কাঁচের একটি টুকরো ঢুকে যায় এক ছাত্রের চোখে।
কিছুদিন আগে ফটিকছড়িগামী একটি বাসেও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
চবি প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিয়মিত পরিবহন ফি দিলেও কোনো ধরনের পরিবহন সুবিধা ছিল না ওই তিন উপজেলার শিক্ষার্থীদের জন্য। ২০০০ সালে ওই তিন উপজেলায় দুটি করে মোট ছয়টি বাস দেওয়া হয়। আর বাসগুলো সংরক্ষণের দায়িত্ব বিআরটিসির।
সরেজমিন বিআরটিসির প্রতিটি বাসের বেহাল দশা দেখা গেছে। ভাঙা সিট, সিটের পাশে গাড়ির বডিও অনেকাংশে ভাঙা। বিআরটিসিরি এই লাল বাসগুলোয় গাদাগাদি করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছে শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, অনেকসময় বাসগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হলে বাসের সিঁড়িতেও গাদাগাদি করে দাঁড়াতে হয়। যা শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক বড় ঝুঁকি। এমনকি বাসের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়াও নিয়মিত চিত্র। তখন শিক্ষার্থীদেরই উল্টো গাড়িটিকে ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যেতে হয়!
চবির বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী নাদিয়া সুলতনা জয়নিউজকে বলেন, জানালার কাঁচ ভাঙা, তাই জানালা খোলার সময় হাত কেটে যাওয়ারও শঙ্কা থাকে। অনেকসময় গাড়ি মাঝরাস্তায় বন্ধ হয়ে গেলে পেছন থেকে ছেলেদের ধাক্কা দিতে হয়। আবার এসব বাস থেকে বিষাক্ত কালো ধোঁয়াও নির্গমন হয়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে রাউজান ছাত্র ফোরামের সদস্য অনিক তালুকদার জয়নিউজকে বলেন, আমরা পরিবহন ফি দিই, তাই ভালো বাস আশা করি। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরও তারা বাস পরিবর্তন করেন না।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে চবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রণব মিত্র চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, ছাত্র সমিতিগুলো আমাদের কাছে প্রায় আসে। তারা বলছে, শিক্ষার্থীর তুলনায় বাসের সংখ্যা অনেক কম, গাড়িগুলোও ভালো না। তবে আমরাও মনে করি, বাসের সংখ্যা বাড়ানো উচিত।