নগরের পাথরঘাটার রাধাগোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরে ছিল ভক্তদের ভিড়। সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল কুমারীর আসনে কে বসছেন তা নিয়ে। এবার কুমারীরুপে পূজিত হলেন সেন্ট যোসেফস স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ৮ বছরের শ্রেয়সী বিশ্বাস। যার শাস্ত্রীয় নাম কুষ্ঠিকা।
পূজার পূর্বে কুমারীকে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হয়। হাতে দেওয়া হয় ফুল, কপালে সিদুরের তিলক এবং পায়ে আলতা। ঠিক সময়ে সুসজ্জিত আসনে বসিয়ে ষোড়শোপচারে পূজা করা হয় কুমারী মাকে। চারদিক মুখরিত হয় শঙ্খ, উলুধ্বনি আর মায়ের স্তব-স্তুতিতে।
রোববার (৬ অক্টোবর) মহাঅষ্টমীর দিন সকালে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শ্রেয়সীকে কুমারী হিসেবে পূজা করা হয় দেবীদূর্গার অঙ্গরূপে।
কুমারীপূজায় পূজারী ছিলেন পণ্ডিত বাবলা চক্রবর্তী, তন্ত্রধারে জুয়েল নাথ। শ্রেয়সী দেওয়ানজী পুকুর পাড় এলাকার ডা. বিপ্লব বিশ্বাস ও স্মৃতিকণা বিশ্বাসের বড় নাতনি। তার বাবা শ্যাম কুমার বিশ্বাস ও মা তনিমা বিশ্বাস টিনা।
মন্দিরের পূজারিরা জয়নিউজকে বলেন, সনাতন ধর্ম মতে কুমারীপূজা হলো ষোলো বছরের কমবয়সী অরজঃস্বলা কুমারী মেয়ের পূজা। শারদীয় দুর্গাপূজার অংশ হিসেবে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
হিন্দু শাস্ত্রেরবর্ণনানুসারে কুমারীপূজায় কোনো জাতি, ধর্ম বা বর্ণভেদ নেই। দেবীজ্ঞানে যেকোন কুমারীই পূজনীয়, এমনকি বেশ্যাকুলজাত কুমারীও। তবে সাধারণত ব্রাহ্মণ কুমারী কন্যার পূজাই সর্বত্র প্রচলিত। এক্ষেত্রে এক থেকে ষোলো বছর বয়সী যেকোন কুমারী মেয়ের পূজা করা যায়। বয়সের ক্রমানুসারে পূজাকালে এই সকল কুমারীদের বিভিন্ন নামে অবহিত করা হয়।
শ্যামল সাধু মোহন্ত মহারাজ পূজার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, কুমারী আদ্যাশক্তি মহামায়ার প্রতীক। দুর্গার আরেক নাম কুমারী। মূলত নারীকে যথাযথ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে এ পূজা করা হয়। মাটির প্রতিমায় দেবীর যে পূজা করা হয় তারই বাস্তব রূপ কুমারীপূজা।