রাউজানে সর্তা খালে পাওয়ার পাম্প বসিয়ে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন। এতে বিলীন হয়ে গেছে উত্তর হলদিয়া বড়ুয়াপাড়া সওদাগর বাড়ি, আজিজুর রহমান বাড়ি, বাড়ইপাড়া ও কুলালপাড়ার অর্ধশত বসতবাড়ি। বিলীন হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে আরো শতাধিক বসতবাড়ি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সর্তার খাল খাল থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। ট্রাক ও জীপভর্তি বালু পরিবহন করা হচ্ছে হলদিয়া ভিলেজ রোডে। এতে বিভিন্ন স্থানে গর্ত হয়ে সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এদিকে বালুখোকোদের কারণে হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর হলদিয়া বড়ুয়াপাড়া, কুলালপাড়া, সওদাগর বাড়ি, আজিজুর রহমান বাড়ি, রাড়ইপাড়া, অমতইল্যা টিলা ও গজর্নিয়া এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বালুখোকোরা সর্তার খালে পাওয়ার পাম্প বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় বেড়ে গেছে সর্তার খালের ভাঙন। এতে স্থানীয়দের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা এর প্রতিবাদ করলে ঠুকে দেওয়া হচ্ছে মিথ্যা মামলা।
ভাঙা সড়কের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় শিক্ষার্থীসহ শিক্ষার্থীদের। হালে হলদিয়া ইউনিয়নের আমির হাট এলাকার এয়াসিন শাহ কলেজ, এয়াসিন শাহ উচ্চ বিদ্যালয়, গর্জনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গর্জনিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, হলদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, হলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হলদিয়া সাজেদা কবির চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। প্রতিদিন তাদের হলদিয়া ভিলেজ রোড পাড়ি দিতে হচ্ছে কাদা মাড়িয়ে।
সর্বশেষ গতকাল (৬ অক্টোবর) অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে আবেদন জানিয়েছেন হলদিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের দুইশ’ বাসিন্দা। তারা অভিযোগ করেন, হলদিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কয়েকজন প্রভাবশালী কয়েক বছর ধরে সর্তার খালে পাওয়ার পাম্প বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এতে হলদিয়া বড়ুয়াপাড়া, সওদাগর বাড়ি, আজিজুর রহমান বাড়ি, বাড়ইপাড়া ও কুলালপাড়া এলাকার অর্ধ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি সর্তা খালে বিলীন হয়ে গেছে। আরো শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে । বালু উত্তোলনের কারণে সর্তা খালের ভাঙনে অনেকে বাপদাদার বসতভিটা হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্যত্র বসবাস করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা আরো অভিযোগ করেন, এলাকার লোকজন অবৈধ বালু উত্তোলনে বাধা দিলে বালুখোকোরা এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ১৭ জন যুবককে আসামি করে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। বালু উত্তোলনে বাধা দিলে আরো মামলা হবে বলেও তারা হুমকি দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জয়নিউজকে বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষতি করে কাউকে সর্তা খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেওয়া যাবে না । কেউ সর্তা খাল থেকে বালু উত্তোলন করলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। এজন্য তিনি ইউএনওর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
যোগাযোগ করা হলে ইউএনও জোনায়েদ কবির সোহাগ জয়নিউজকে বলেন, কয়েক দিন আগে হলদিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়েছি। এ সময় সর্তা খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ধংস করেছি । হলদিয়া এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিন গিয়ে সর্তা খালে পাওয়ার পাম্প বসিয়ে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জয়নিউজ