কক্সবাজারের দোকানগুলোতে আকস্মিক পেঁয়াজ শূন্য হয়ে পড়েছে। বাজারের দোকানগুলোতে পেঁয়াজ কিনতে গেলে দোকানীদের সাফ জবাব-‘পেঁয়াজ নেই।’ স্থানীয়দের অভিযোগ, শহরের বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে।
ওদিকে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানিও অব্যাহত রয়েছে। ফলে টেকনাফ সীমান্তে পেঁয়াজের দাম অনেকটাই কম থাকলেও বাজারগুলোতে তার উল্টো পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, কক্সবাজার শহরের বড়বাজার এলাকার কোনো কোনো দোকানে কেজি প্রতি ৮০/১০০ টাকা দিলে কিছু পেঁয়াজ মিলছে। তবে ক্রেতাদের চাহিদার চেয়ে পরিমাণে কম পাচ্ছে। দাম বেশী দিলেও কোনো দোকানিই এক সঙ্গে কয়েক কেজি পেঁয়াজ ক্রেতাকে দিচ্ছে না। বাজারে পেঁয়াজ নিয়ে রীতিমত কাড়াকাড়ি চলছে।
বড়বাজার এলাকার ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম জয়নিউজকে বলেন-‘ আমার দোকানেও পেঁয়াজ নেই। পরিমাণের যাই আছে তা কেজিতে ৮০ টাকা বিক্রি করছি। মঙ্গলবার(১৫ অক্টোবর) বিক্রির জন্য আর মজুদ নেই।’
তিনি আরও জানান, আড়তদারদের কাছেও পেঁয়াজের মওজুদ নেই। টেকনাফ ও চট্টগ্রামের আড়তদাররা চাহিদানুযায়ী পেঁয়াজ বিক্রি করছে না। সরবরাহ না থাকায় আকস্মিক এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, কক্সবাজার শহরের আড়তদাররা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে।
জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জয়নিউজকে বলেন-‘ এসময়ে পেঁয়াজের বাজার নিয়ে তিনি অবহিত নন। তবে তিনি বাজারের খবর নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিবেন।’
স্থানীয় পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা আজিজুল হক জয়নিউজকে জানান, মিয়ানমারের আমদানি করা পেঁয়াজ আনতে গিয়েও তারা বিপাকের মুখে পড়ছেন। মিয়ানমারের পেঁয়াজের দামও বাড়তি হওয়ায় পরিবহণ খরচসহ এনে প্রশাসনের নির্ধারিত মূল্যে তারা বিক্রি করে পোষাতে পারছেন না।
এদিকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থল বন্দরে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানিও অব্যাহত রয়েছে। দেশের পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ করতে আমদানিকারকরা আগের চেয়ে বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করছেন। মিয়ানমার থেকে বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ এনে এবং জেলা প্রশাসনের বাজার মনিটরিংয়ের কারণেও স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
স্থলবন্দর কাস্টমস্ সূত্রে জানা যায়, রোববার মিয়ানমার থেকে স্থলবন্দরে ৭৬০ দশমিক ৫৮৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। ১ অক্টোবর থেকে রোববার পর্যন্ত ১৩ দিনে ৭ হাজার দশমিক ৪৮৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল ৩ হাজার ৫৭৩ মেট্রিক টন এবং আগস্ট মাসে আমদানি হয়েছিল মাত্র ৮৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ।
আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে তারা নিজেদের পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তবে আগামীতেও পেঁয়াজের আমদানি অব্যাহত থাকবে বলে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন।
মিয়ানমারের পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকায় টেকনাফ সীমান্তের স্থানীয় পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম এখন আগের চেয়ে কমেছে বরেও দাবি আমদানিকারকদের। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন মিয়ানমারের পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৫৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ সব্বোর্চ ৭০ টাকা কেজি দরে মূল্য নির্ধারণ করেছিল।