সৌখিন মানুষদের ঘরে শোভা পায় অ্যাকুরিয়াম। আবার উন্নত দেশে বিনোদনের জন্য ইনডোরে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল অ্যাকুরিয়াম পার্ক। কিন্তু ব্যস্ত সড়কের পাশে অ্যাকুরিয়াম পার্ক?
এ কথা শুনে অনেকেরই চোখ কপালে উঠার কথা। তবে অবাক ঠেকলেও সত্য, ব্যস্ত সড়কের পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে অ্যাকুরিয়াম পার্ক।
না, ভিনদেশে নয়, নিজ দেশে; তাও ঘরের একেবারে কাছে!
হেলদি সিটি হিসেবে সুখ্যাতি রয়েছে নগরের জামালখানের। সেই দৃষ্টিনন্দন জামালখানের নতুন চমক অ্যাকুরিয়াম পার্ক। জামালখান মোড়ে পিডিবি অফিসার্স হেড কোয়ার্টারের সামনেই গড়ে তোলা হয়েছে দেশের প্রথম স্ট্রিট অ্যাকুরিয়াম পার্ক।
অনন্য এ উদ্যোগের স্বপ্নদ্রষ্টা স্থানীয় কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন। এতে সহায়তা করেছে বেসরকারি একটি সংস্থা। নকশা প্রণয়ন করেছেন স্থপতি আইনুল ইসলাম শাওন, স্থপতি তামজীদুল ইসলাম এবং ভাস্কর প্রণব সরকার। আর এ স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেছেন তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা শুভাশীষ পোদ্দার।
নান্দনিক এই অ্যাকুরিয়াম পার্কে ব্যয় হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। এখানে রয়েছে পৃথক তিনটি অ্যাকুরিয়াম। অ্যাকুরিয়ামগুলোর দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ১২৮ বর্গফুট, ৬০ বর্গফুট ও ১১২ বর্গফুট। অ্যাকুরিয়ামে থাকবে ৪০ থেকে ৫০ প্রজাতির মাছ। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অ্যাকুরিয়ামটিতে ছাড়া হবে ২৫ প্রজাতির মাছ। দ্বিতীয় অ্যাকুরিয়ামটিতে থাকবে বড় সাইজের মাছ।
অ্যাকুরিয়াম ছাড়াও সাড়ে ৪০০ ফুটের এই জায়গায় রয়েছে বাগান ও বসার জায়গা। অ্যাকুরিয়ামের আশপাশে প্রায় দেড়শ’ দর্শনার্থী বিশ্রাম নেওয়ার পাশাপাশি নানা রঙের, নানা জাতের মাছের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
1616
স্ট্রিট অ্যাকুরিয়ামের স্বপ্নদ্রষ্টা কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন জয়নিউজকে বলেন, বাংলাদেশের কোথাও এরকম স্ট্রিট অ্যাকুরিয়াম নেই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইনডোরে অ্যাকুরিয়াম থাকলেও ফুটপাত সংলগ্ন জায়গায় নেই।
তিনি আরো বলেন, মৎস্যবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞদের দিয়ে অ্যাকুরিয়াম রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। এছাড়া অ্যাকুরিয়ামসহ প্রকল্পের নিরাপত্তায় নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা রাখা হবে। স্থানীয় জনগণসহ সবার প্রতি অনুরোধ, এর সৌন্দর্য রক্ষায় তারা যেন সচেতন থাকেন।
স্ট্রিট অ্যাকুরিয়ামের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার কারিগর তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা শুভাশীষ পোদ্দার। অ্যাকুরিয়ামটির তত্ত্বাবধায়কও তিনি। শুভাশীষ জয়নিউজকে বলেন, আমি ১৯৯৬ সাল থেকে অ্যাকুরিয়াম ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। যতটা না পেশার খাতিরে তার চেয়ে বেশি মনের আনন্দের জন্য।
জামালখানে যে প্রক্রিয়ায় অ্যাকুরিয়ামটি করা হয়েছে তা দেশে প্রথম উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি চীন, মালেশিয়া, থাইল্যান্ড থেকে বিভিন্ন অ্যাকুরিয়ামের জিনিস এনেছি। তাছাড়া এখানে পাওয়া যাবে সৌখিন অ্যাকুরিয়ামের জিনিসপত্র। যে কেউ এখানে থেকে পছন্দের ছোট-বড় অ্যাকুরিয়াম অর্ডার করতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন, এই অ্যাকুরিয়াম পার্ক সবার বিনোদনের খোরাক যোগাবে, আবার ভিনদেশি বাহারি মাছ সম্পর্কেও সবাই জানতে পারবে। ফুটপাতে এমন অ্যাকুরিয়াম বিশ্বের আর কোথাও নেই।
সন্ধ্যায় জামালখানে পথের পাশে আলোর খেলা দেখে একটু থমকে যান পথচারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বৈশাখী শীল। একটু সামনে এগোতেই নানা রঙের মাছের খেলা দেখে তিনি রীতিমতো অবাক!
বৈশাখী শীল জয়নিউজকে বলেন, জামালখানে স্ট্রিট অ্যাকুরিয়ামটি আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। এটি নিঃসন্দেহে জামালখানকে আলাদা পরিচিতি দিবে। নগরের অন্যান্য স্থানেও যদি এমন দৃষ্টিনন্দন অ্যাকুরিয়াম পার্ক গড়ে তোলা যায় তাহলে তা বিনোদনের পরিধি বিস্তৃত করবে।