সীতাকুণ্ডের কুমিরার ঘাটগড় এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া ডাক্তার শাহআলম হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে র্যাব। এর আগে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ৮টার দিকে সড়কের পাশ থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানাতে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নগরের চান্দগাঁওতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে র্যাব-৭। এতে র্যাব-৭ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কাজী মো. তারেক আজিজ বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সীতাকুণ্ড উপজেলার গরিবের ডাক্তারখ্যাত মো. শাহআলম খুনের ঘটনায় মোট পাঁচজনের একটি চক্র অংশ নেয়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যায় জড়িত বিন মনসুর পরিবহন নামে লেগুনার ড্রাইভার মো ফারুককে (১৯) কোতোয়ালি থানার রেল স্টেশন এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে ডা. শাহআলমকে হত্যার কথা সে স্বীকার করে। কিন্ত তদন্তেরস্বার্থে হত্যার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের নাম বলা যাচ্ছে না। তবে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে লেগুনার ড্রাইভার ফারুক লোমহর্ষক এ হত্যার বর্ণনা দেন। মো. ফারুক র্যাবকে জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় সহযোগীরা তাকে ফোন করে তার চালিত লেগুনা নিয়ে চেরাকান্দী এলাকায় যাওয়ার জন্য বলে। চেরাকান্দী যাওয়ার পর তার অন্য সহযোগীরা গাড়িতে উঠে। এরপর ছিনতাইয়ের উদ্দেশে তারা রাস্তায় গাড়ি চালাতে থকে, লক্ষ্য গাড়িতে যাত্রী নেওয়া। রাত সাড়ে ৯টায় ছোট কুমিরায় ডা. শাহআলম গাড়ি থামানোর জন্য সংকেত দেয়। তখন তারা গাড়ি থামিয়ে তাকে তুলে। এরপর কে-বাই নামক জায়গায় গেলে তাদের আরো কিছু সহযোগী গাড়িতে উঠে।
‘গাড়িটি রয়েল গেট পর্যন্ত যাওয়ার পর তারা ডাক্তার শাহআলমের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ও জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় ডা. শাহআলম ওসব দিতে অস্বীকৃতি জানায়। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে ডা. শাহআলমের ধস্তাধস্তি হয়। এরপর তারা ডা. শাহআলমকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। পরে তারা গাড়িটি নিয়ে কুমিরা ঘাটঘর এলাকায় গিয়ে লাশ রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। লাশ ফেলে দেওয়ার পর লেগুনাটি নিয়ে তারা বাড়বকুণ্ড সাগরপাড়ে যায়। সেখানে তারা লেগুনাটি ও হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ধুয়ে নেয়।’
ফারুক আরো জানায়, তারা প্রায়সময় গাড়ি নিয়ে এই রুটে ছিনতাই করতো। কিন্ত ডা. শাহআলম টাকা-পয়সা ও জিনিসপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল বিদায় তাকে হত্যা করেছে তারা। তারা জানতো না যে, তিনি একজন ডাক্তার।
প্রসঙ্গত, ডাক্তার মো. শাহ আলম মদিনা হাসপাতালে শিশু বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নিজ এলাকার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে মদিনার চাকরি ছেড়ে ২ বছর আগে বাংলাদেশে ফিরে আসেন তিন। এসে সীতাকুণ্ডের কুমিরা বাজারে গড়ে তোলেন বেবী কেয়ার নামে ক্লিনিক।