রামু বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। প্রশাসনের অভিযানে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছ বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সাপ্তাহিক হাটের দিনে বাজারের কোথাও পেঁয়াজ এর দেখা পায়নি ক্রেতারা। ফলে পেঁয়াজ কিনতে না পারায় হতাশ ক্রেতারা। ব্যবসায়ীদের এমন সিদ্ধান্তকে অগ্রহণযোগ্য বলেও মনে করছেন ক্রেতারা।
ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা জানান,খাতুনগঞ্জে সোমবার (২২ অক্টোবর) পেঁয়াজ এর পাইকারি মূল্য ছিল প্রতি কেজি ৮৬ টাকা। অথচ রামুতে প্রশাসনের কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা করে বিক্রি বাধ্য করছেন। অথচ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে। প্রশাসন যদি সেখানে অভিযান চালায় তাহলে সর্বত্র দাম কমে যাবে। কিন্তু প্রশাসন উল্টো মফস্বলের ব্যবসায়ীদের ওপর দায় চাপিয়ে অভিযান চালাচ্ছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তারা আরো জানান, গত শনিবার (১৯ অক্টোবর) উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) চাই থোয়াইলা চৌধুরী বাজারে অভিযান চালান। এসময় তিনি ৭০ টাকা করে পেঁয়াজ বিক্রির জন্য বাজারের সব ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দেন। আগেরদিন শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমাও বাজারে অনুরুপ অভিযান চালিয়ে ৭০ টাকা করে পেঁয়াজ বিক্রির জন্য নির্দেশ দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, শনিবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) চাই থোয়াইলা চৌধুরী তার দোকানে উপস্থিত থেকে তাকে ৭০ টাকা করে পেঁয়াজ বিক্রিতে বাধ্য করান। পেঁয়াজের ক্রয়মূল্য আরো বেশি হওয়ায় তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যে কারণে এখন তিনি পেঁয়াজ ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ করে দিয়েছেন।
এদিকে মঙ্গলবার সাপ্তাহিক হাট চলাকালে বাজার ঘুরে কোথাও পেঁয়াজের অস্তিত্ব মেলেনি। এসময় বাজারে আসা অসংখ্য ক্রেতাকে পেঁয়াজের জন্য এ দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে।
তবে বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, ক্রেতাদের সুবিধার্থে ক্রয়মূল্য অনুযায়ী সামান্য লাভে তারা পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। পাইকারি বাজারে দাম কমলে তারাও কম দামে বিক্রি করবেন। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনকে আরো সহনশীল হওয়ার দাবি জানান।
রামু ফকিরা বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মো. নুরুল আলম পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, চট্টগ্রামের আড়ত এবং টেকনাফে পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা কিনতে পারেনি। কারণ বেশি দামে ক্রয় করলে বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়।
এ ব্যাপারে রামু উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) চাই থোয়াইলা চৌধুরী জানান, পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ রাখার বিষয়টি তাকে কেউ অবহিত করেনি। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করা হবে।
তিনি আরো জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজের কোনোপ্রকার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। শুধু বলা হয়েছিল, আড়তের ক্রয়মূল্য থেকে সামান্য লাভে বিক্রি করতে। লোকসান দিয়ে কাউকে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বলা হয়নি।
জয়নিউজ/খালেদ/পিডি