অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামাল হোসেনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলাটি করেন কেফায়েতুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। তিনি উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নের সিকদারপাড়ার মরহুম ডা. আমান উল্লাহর ছেলে।
মামলায় জেলা প্রশাসককে প্রধান আসামি করা হয়। অপর আসামিরা হলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশরাফুল আফসার, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা দেওয়ান মওদুদ আহমদ, অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মোমিনুল হক ও দেবতোষ চক্রবর্তী, ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কানুনগো মিলন কান্তি চাকমা, সার্ভেয়ার কেশব লাল দাশ, ইব্রাহিম, সিরাজুল হায়দার, আবুল খায়ের এবং স্থানীয় ছয় ব্যক্তি মাতারবাড়ির লাইল্যাঘোনা এলাকার মো. সেলিম, তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, ইসলাম মিয়ার তিন সন্তান অলি আহমদ, জামাল উদ্দিন ও তাহেরা বেগম, আলী আসকরের ছেলে রোমেনা আফরোজ এবং মাতারবাড়ির মগডেইল এলাকার আবু ছালেক।
এদিকে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এবং কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ খন্দকার হাসান মো. ফিরোজ মামলাটি আমলে নিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি ২০০ ধারায় মামলার বাদী কেফায়েতুল ইসলামের জবানবন্দিও নিয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে বাদী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পের অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিপূরণের জন্য যান। এ সময় ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা দেওয়ান মওদুদ আহমদের কার্যালয়ে গেলে আসামিরা পরষ্পর যোগসাজশে ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়ার জন্য তাঁর কাছে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।
এমনকি তাঁকে অফিসে বসিয়ে রেখে তাৎক্ষনিক ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য করেন। ঘুষের অবশিষ্ট টাকা ৭ দিনের মধ্যে দিলে ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়ার আশ্বাস দেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ঘুষ নেওয়ার পর বাদীর অধিগ্রহণ হওয়া ৯৪, ৫০৭৯, ৫০৮২ ও ৫০৮৬ দাগের ক্ষতিপূরণের চেকে মনোয়ারা বেগমসহ অন্য ছয়জনের ‘কেনা সম্পত্তি’ দেখানো হয়। এ কারণে তাদের প্রাপ্য ১৮ লাখ ৩ হাজার ৩১৯ টাকা কেটে বাদীকে শুধু ৮ লাখ ৭২ হাজার ২৬৯ টাকার চেক দেওয়া হয়। অবশিষ্ট টাকা মনোয়ারা বেগমসহ অন্য আসামিদের দেওয়া হয়।
বাদী কেফায়েতুল ইসলামের দাবি, মনোয়ারাসহ অন্য আসামিদের ক্রয় করা ও দখলীয় জমির দাগ নম্বর ৫০৪১, যা অধিগ্রহণের আওতায় পড়েনি। অথচ জেলা প্রশাসকসহ অন্য আসামিরা মনোয়ারা বেগমসহ ছয় আসামিকে ১৮ লাখ টাকার চেক দেন। এজন্য তাদের কাছ থেকে ৩৫ শতাংশ ঘুষ নেওয়া হয়েছে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে বাদী এই অপরাধের বিচার চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ঢাকার সেগুন বাগিচার সদর দপ্তরে যান। সেখান থেকে পরামর্শ দেওয়া হয় কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলা করতে।
বাদীর আইনজীবী মো. জাকারিয়া জয়নিউজকে জানান, বাদীর এজাহারটি বিজ্ঞ আদালত গ্রহণ করেছেন। একইসঙ্গে বাদীর জবানবন্দিও গ্রহণ করেছেন।
জয়নিউজ/গিয়াসউদ্দিন/বিআর