হাটহাজারীর দুই নম্বর ধলই ইউনিয়নের হযরত শাহজাহান শাহ (রহ.) দরগাহ সড়কটি ছোট-বড় খানা-খন্দে ভরা। দুই বছরের বেশি সময় ধরে সড়কটির হালদা ব্রিজ পর্যন্ত বেহালদশা। এতে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এরপরও সড়কটি সংস্কারে সংশ্লিষ্টদের কোনো তোড়জোড় চোখে পড়ছে না।
অথচ ভঙ্গুর এ সকটি দিয়ে যানচলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার যাত্রীদের।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত জনগুরুত্বপূর্ণ শাহজাহান শাহ (রহ.) মাজার গেট থেকে পূর্বদিকে সড়কটি পাশের উপজেলা ফটিকছড়ি ও রাউজান যুক্ত হয়েছে। মাজার গেট থেকে হালদা সেতু পর্যন্ত তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক দিয়ে হাটহাজারী ছাড়াও ফটিকছড়ি ও রাউজান উপজেলার প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ যানবাহন যোগে বহুবছর ধরে চলাচল করে আসছেন। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে সিএনজি অটোরিকশা, মাইক্রো, পিকআপ, জিপ, মিনি ট্রাক ও ট্রাকসহ কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে।
স্থানীয় বাসিন্দা কুতুব উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সংস্কারের অভাবে সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে ছোট-বড় দুই শতাধিক খানা-খন্দের সৃষ্টি হওয়ায় যানচলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মাস দুয়েক আগে স্থানীয় সংগঠন নবচেতনা যুবগোষ্ঠীর উদ্যোগে সড়কটি ইট ও বালু দিয়ে সংস্কার করা হয়।
তবে বৃষ্টিতেও ক্রমাগত যানবাহন চলাচলের ফলে কিছুদিনের মধ্যেই সড়কটি পুনরায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই কম-বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী আরও জানান, খানা-খন্দে ভরা দরগাহ রাস্তা হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও রাউজান উপজেলার অর্ধলাখ জনগণের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে। ক্ষতবিক্ষত সড়কে হেলে-দুলে যানবাহন চলাচল করছে। খানা-খন্দে পড়ে বিভিন্ন সময় গাড়ি আটকে যায়। দুর্ঘটনায় অনেকে আহতও হয়েছেন। এখন সড়কটি নতুন করে কার্পেটিং করার কোনো বিকল্প নেই।
ওই সড়কে যান চলকরা বেশ হতাশ চিত্তে বলেন, সড়কের কার্পেটিং ওঠে সৃষ্ট গর্তে অনেক সময় যানবাহন উল্টে যায়, যাত্রীরা আহত হন। গাড়িরও বেশ ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। অনেক কষ্টে ঝুঁকি নিয়েই প্রতিনিয়ত সড়কটিতে গাড়ি চালাচ্ছি। উপার্জিত অর্থের বড় একটি অংশ যানবাহন মেরামতের খরচ হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি আলমগীর জামান জয়নিউজকে বলেন, চরম অবহেলিত সড়কটির বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীকে বারবার বলা হলেও কোনো সমাধান হয়নি। দুই বছর ধরে সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে করে স্থানীয় জনগণ আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। অনতিবিলম্বে সড়ক মেরামত করা না হলে জনদুর্ভোগ আরও বাড়তে থাকবে।
এ ব্যাপারে হাটহাজারী উপজেলা প্রকৌশলী অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মো. কামরুজ্জামান জয়নিউজকে বলেন, সড়কটির প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে সেকান্দর পাড়ার কাছে হালদা সেতু পর্যন্ত তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির উন্নয়ন ও কালভার্ট নির্মাণের জন্য সোয়া দুই কোটি টাকার প্রাক্কলন করে মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের পর টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে দ্রুত সংস্কার কাজে হাত দেওয়া হবে।