পটিয়ায় তিন হাজার পিস ইয়াবাসহ এক যুবককে আটক করে মামলার এজাহারে ৬শ’ পিস ইয়াবার কথা উল্লেখ করেছে পুলিশ। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসামির পেট থেকে ইয়াবা উদ্ধারের কথা জানালেও এজাহারে বলা হয়েছে, তল্লাশি করে আসামির পকেট থেকে ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
যে এসআই মামলাটি তদন্ত করছেন সেই মোবারক হোসেনের নামে আগেও আসামির কাছ থেকে ইয়াবা সরিয়ে ফেলার অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে ওই যুবককে গত শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে আটক করলেও আদালতে পাঠানো হয়েছে রোববার (২৭ অক্টোবর) সকালে। মনে করা হচ্ছে, এ সময়ের মধ্যেই বাকি ইয়াবাগুলো সরিয়ে ফেলেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, আসামিকে শনিবার (২৬ অক্টোবর) আটক করা হয়েছে। তবে ২৫ অক্টোবর রাতে পটিয়া থানার সিসিটিভি ফুটেজে ওই আসামিকে হাজতে দেখা গেছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে পটিয়া থানার জঙ্গলখাইন ইউপির মনসা বাদামতল শাহগদী স্টোরের সামনে থেকে ৬০০ পিস ইয়াবাসহ আব্দুল আজিজ (২৫) নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। অভিযানে নেতৃত্ব দেন থানার এসআই মোবারক হোসেন।
তবে থানার বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ৬০০ নয়, আজিজের কাছে তিন হাজার পিস ইয়াবা ছিল। পুলিশ বাকি ২ হাজার ৪০০ পিস সরিয়ে এজাহারে ৬০০ পিস লিখেছে। এছাড়া আসামিকে ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় আটক করলেও এজাহারে ২৬ অক্টোবর লেখা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে মামলার সাক্ষী জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জয়নিউজকে বলেন, আব্দুল আজিজকে শুক্রবার সন্ধ্যায় আটক করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে মোবারক স্যার ডাকলে আমিসহ আরো দুইজন গিয়ে সাক্ষী দিয়ে আসি।
ইয়াবার পরিমাণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে পরিমাণ ইয়াবা দেখেছি মনে হয়েছে ৬০০ পিসের চেয়ে অনেক বেশি হবে। তবে এজাহারে দেখলাম ৬০০ পিস লিখেছে।
এ বিষয়ে জানতে এসআই মোবারকের মুঠোফোনে অনেকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
জানতে চাইলে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দিন জয়নিউজকে বলেন, আসামির পেটে ইয়াবাগুলো ছিল। তাই বের করতে সময় লেগেছে। সেজন্য আদালতে পাঠাতে দেরি হয়েছে।
কিন্তু এজাহারে লেখা হয়েছে তল্লাশি করে পকেট থেকে ইয়াবা পাওয়া গেছে, এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি তিনি।
উল্লেখ্য, এসআই মোবারকের নামে আগেও আসামির কাছ থেকে ইয়াবা সরিয়ে ফেলার অভিযোগ রয়েছে। গত ১৮ আগস্ট মমতাজ হোসেন (৪৮) নামে এক রোহিঙ্গা নাগরিককে ১৫ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করার পর মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে দিনভর লুকোচুরির অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা এসআই মোবারকের নিকট জানতে চাইলে সে জানায়, ২ হাজার ৩০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। তখন সংবাদকর্মীরা তথ্য নিশ্চিত করে এসআই মোবারককে ১৫ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধারের কথা জানালেও এসআই সংবাদকর্মীদের পাল্টা জানান, ‘১৫ হাজার পিস ইয়াবার কথা যে বলেছে তাকে তার কাছে ধরে নিয়ে আসতে। এ বিষয়ে সংবাদকর্মীরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহান উদ্দিনকে জানালে তিনি সংবাদকর্মীদের কিছুক্ষণের মধ্যে নিশ্চিত করে জানানো হবে বলে জানান।
পরে তিনি রাত সাড়ে ১১টার দিকে সংবাদকর্মীদের ১৫ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার এবং রোহিঙ্গা নাগরিককে আটকের বিষয়টি স্বীকার করেন।