চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সি ইউনিটের পরীক্ষা শেষে ফেরার পথে এক পরীক্ষার্থীর বাবার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন। একইসঙ্গে বিবৃতিতে ছাত্রলীগ দুঃখ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে শাখা ছাত্র ইউনিয়ন।
এছাড়াও ছাত্র ইউনিয়ন তাদের বিবৃতিতে ট্রেনের শিডিউল বাড়ানো, বগি বৃদ্ধি, ট্রেনের ডবল লেন চালু এবং পর্যাপ্ত ফ্যানের দাবি জানায়।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। ছাত্রলীগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর স্বাক্ষর রয়েছে। আর ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতিতে স্বাক্ষর রয়েছে দপ্তর সম্পাদক সাজাং চাকমার।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগ জানায়, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে সি’ ইউনিটের পরীক্ষা দিতে আসা ভর্তি ইচ্ছুক তিন্নি দাশের পিতা মৃনাল দাশ পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে ট্রেনে উঠতে গিয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে আকস্মিক মৃত্যু বরণ করায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু এক শোক বার্তায় শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।
এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত ট্রেনের ব্যবস্থাসহ ট্রেনে নিরবিচ্ছিন্ন ফ্যানের ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
শাখা ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশের স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। প্রতিবছর এক্ষেত্রে অসংখ্য ভর্তি পরীক্ষার্থীদের মাত্রাতিরিক্ত চাপ থাকে। এইদিকে ভর্তি পরীক্ষার্থী এবং তাদের সঙ্গে আসা অভিভাবকদের যাতায়াতকালীন সময়ে অসহ্য দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে নতুন শাটল ট্রেনের সিডিউল দিলেও সেটা পর্যাপ্ত সুবিধা দিতে পারছে তো না বরং চরম ভোগান্তিতে ফেলছে। এরই ফলশ্রুতিতে আজকে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে সি’ ইউনিটের পরীক্ষা দিতে আসা তিন্নি দাশের পিতা মৃণাল দাশ পরীক্ষা শেষে শাটল ট্রেনে অবস্থানরত অবস্থায় স্ট্রোকে মৃত্যুবরণ করেছেন। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ এই মৃত্যুতে গভীর শোক এবং ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
এ ঘটনায় আমরা ছাত্র ইউনিয়ন চবি সংসদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ব্যর্থতার দায় সুস্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতসহ যাবতীয় সুবিধাদির দায়িত্ব প্রশাসনের এবং এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ব্যর্থতার দায়স্বরূপ এর ক্ষতিপূরণ পরিবারকে দিতে হবে। এরই সঙ্গে সঙ্গে পরবর্তীতে এরকম ভোগান্তি দূর করার জন্য প্রশাসনের কাছে ট্রেনের শিডিউল বাড়ানো, বগি বৃদ্ধি, ট্রেনের ডবল লেন চালু করা এবং ট্রেনে পর্যাপ্ত ফ্যানের ব্যবস্থা রাখার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এর আগে বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সি’ ইউনিটের পরীক্ষা শেষে মেয়ে ও মেয়ের বান্ধবীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে শাটল ট্রেনে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান মৃণাল দাশ নামে এক অভিভাবক।