সন্তানের স্বীকৃতি চেয়ে বাঁচার আকুতি কিশোরী মুন্নীর

আমার এখন কি হবে? আমার আত্মহত্যা ছাড়া কোনো উপায় নেই। স্কুলে যাওয়ার পথে প্রতিদিন নানা কটূক্তি করতো সে। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভনে জোরপূর্বক সম্পর্ক করে। এখন আমার মেয়েটির কি হবে? তার কি অপরাধ? আমরা খুব গরীব বলে কোথাও কোনো বিচার পাইনি। কেউ আমাদের সহযোগিতা করেনি। এভাবে হতাশায় দিন গুণছে লোহাগাড়ার সাতগড় কুলালপাড়ার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়াতুল জান্নাত মুন্নী। ঘটনার পর থেকে তারা সমাজচ্যুত বলে জানান।

- Advertisement -

মুন্নীর নানা জাফর আহমদ জয়নিউজকে বলেন, আমরা গরীব মানুষ। মাটির হাঁড়ি পাতিল তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমি আমার মেয়ে ফাতেমা বেগমকে ১৫ বছর আগে চকরিয়া খুটাখালী এলাকায় বিয়ে দিয়েছিলাম। বিয়ের এক বছরের মাথায় মুন্নী জন্ম নেয়। ছয়মাস পর মুন্নীর বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পর ফাতেমা ও তার শিশুকন্যা মুন্নীকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি।

- Advertisement -google news follower
সন্তানের স্বীকৃতি চেয়ে বাঁচার আকুতি কিশোরী মুন্নীর | Lohagara ctg pic 01.11.19 1
নানার সঙ্গে শিশুকন্যাসহ মুন্নী

মুন্নীকে আমার সঙ্গে রেখে তার মাকে অন্যত্র বিয়ে দেই। সে লোহাগাড়ার আধুনগর গুলএজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণীতে পড়ার সময় চুনতি ইউনিয়নের পশ্চিম চান্দা মাঝির পাড়া এলাকার প্রবাসী মো. কামাল উদ্দিনের ছেলে মো. শওরাত হোসেন নানা কটূক্তি করতো। এ বিষয়ে তার পরিবারকে অবহিত করা হলেও শওরাত বিয়ের প্রলোভনে আমার নাতনির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে।

বিয়ের আশ্বাসে চকরিয়া নিয়ে গেলেও সেখানেও তার সঙ্গে শারিরীক সম্পর্ক করে। এক পর্যায়ে সে অন্তঃসত্বা হয়ে পড়লে তার বিদ্যালয়ে অসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ১৪ জানুয়ারি তার একটি কন্যাশিশুর জন্ম হয়। আমরা বিষয়টি শওরাতের পরিবারকে জানালে তারা টাকার বিনিময়ে সমাধান করতে বলেন। পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। সেখানেও কোনো বিচার না পেয়ে গত সেপ্টেম্বর মাসে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে শওরাতসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করি। এরইমধ্যে তড়িঘড়ি করে পাসপোর্ট বানিয়ে সৌদি আরব চলে যান অভিযুক্ত শওরাত হোসেন।

- Advertisement -islamibank

এব্যাপারে চুনতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জনু জয়নিউজকে বলেন, তারা আমার কাছে বিচার চেয়েছিল। তবে অভিযুক্ত শওরাত হোসেন বিদেশে চলে যাওয়ায় আমি তাদেরকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। তাদেরকে সমাজচ্যুত করার কথা শুনে সে বিষয়ে এলাকার মানুষকে নিষেধ করেছি।

মুন্নী জয়নিউজকে বলেন, আমাকে শওরাতের পরিবার নানাভাবে হয়রানি করছে। মামলা তুলে নিতে ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং আদালতে হাজিরা দিতে পর্যন্ত বাধা দিচ্ছে। এব্যাপারে লোহাগাড়া থানায় ১০ অক্টোবর সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। আমি আমার শিশু সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের স্বীকৃতির দাবি জানাই।

লোহাগাড়া থানার উপ-পরিদর্শক অজয় দেব শীল জয়নিউজকে বলেন, অভিযুক্ত শওরাতের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।

শওরাতের মা আয়েশা বেগম কোনো ধরণের হুমকি দেওয়ার কথা অস্বীকার করে জয়নিউজকে বলেন, আমার ছেলে যদি আদালত থেকে দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে আদালত যে রায় দেয় সেটা আমরা মেনে নেব।

জয়নিউজ/পুষ্পেন/বিআর
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM