মুক্তিযুদ্ধের ছবি ‘ওরা ১১ জন’ সিনেমায় বাঙালির আত্মত্যাগ, গেরিলা যোদ্ধাদের বীরত্ব ফুটিয়ে তুলেছিলেন চাষী নজরুল ইসলাম। সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার এসএম মেহেদী হাসানও শোনালেন ১১ জনের বর্ণনা।
তবে এ ১১ জন চট্টগ্রাম আন্তঃজেলার দুর্ধর্ষ ডাকাত। যারা দিনের আলো ফোটার আগেই সর্বস্ব কেড়ে নিতেন বাস-ট্রেনের যাত্রীদের।
শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে চেরাগি পাহাড়ের চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) দক্ষিণ জোনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডাকাত দলের বর্ণনা দিচ্ছিলেন তিনি।
মেহেদী হাসান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ১১ সদস্য তাদের নিজস্ব গাড়ি ব্যবহার করে ডাকাতি করতো। তাদের টার্গেট ছিল ভোরে নগরে আসা বাস-ট্রেনের যাত্রীরা। যাত্রীদের অনুসরণ করে নির্জন জায়গা বুঝে অস্ত্র ও ছুরি ঠেকিয়ে মোবাইল, টাকা ছাড়াও নিয়ে নিত সঙ্গে থাকা পাসপোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র। তারপর যোগাযোগ করে মূল্যবান কাগজপত্র ফিরিয়ে দেওয়ার নামে করতো আরেক দফা চাঁদা আদায়। ডাকাতি শেষে তারা লুকাতো বিভিন্ন পাহাড়ের গুহায়।
তিনি আরো বলেন, আসামিরা নগরের বাইরেও সুযোগ বুঝে ডাকাতি করত। বাসা, অফিস, দোকানের তালা ভেঙে মালামাল লুট করত। এসময় তারা নিজেদের ট্রাকও ব্যবহার করত। তাদের সঙ্গে ঘর ভাঙার সরঞ্জামাদি ছাড়া থাকত দেশীয় অস্ত্র। কোথাও বাঁধার সম্মুখীন হলে ব্যবহার করত সেই অস্ত্র।
শনিবার ভোর চারটায় গাড়িসহ ডাকাতির প্রস্তুতিকালে টাইগারপাস মোড় থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, এরা ছোট-বড় প্রায় দুই শতাধিক ডাকাতি ও ছিনিতাই করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। এই দলের প্রধান মো. সালাউদ্দিন আগেও জেল খেটেছেন। বের হয়ে আবারও সংঘবদ্ধ হয়ে তারা ডাকাতি করত। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নগরের বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে বলেও তিনি জানান।
আসামিদের কাছ থেকে দুটি দেশীয় এলজি, দুটি কার্তুজ, দুটি টিপ ছুরি, পিকআপ, প্রাইভেট কারসহ দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
১১ আসামিরা হলেন-ডাকাত দলের প্রধান মো. সালাউদ্দিন (২৪), মো. রাজু (১৯), ইসরাফিল হোসেন আলম (২২), মো. আকবর হোসেন (২২), মো. সেলিম (২৮), মো. টিটু (২৫), মো ইয়াসিন (২৩), মো. ফরজ আলী (৩৫), মো. সুমন (২৫), মো. রহিম ওরফে হৃদয় (২২) ও মো. পলাশ হোসেন (২৫)।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি-দক্ষিণ) শাহ মো.আব্দুর রউফ, এসি কোতোয়ালি নোবেল চাকমা, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন ও অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশ কর্মকর্তারা।