খাতুনগঞ্জে চতুর্থ দফায় ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজারে অভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে কেজি ৪২ টাকায় কেনা পেঁয়াজ ৯০-১১০ টাকায় বিক্রির প্রমাণ পাওয়ায় চার আড়তদারকে লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
রোববার (৩ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় শুরু হওয়া অভিযান চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। অভিযানে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম।
অভিযান শেষে তিনি বলেন, যে সব পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে ৪২ টাকায় আমদানি হয়েছে সেগুলো এখানে ৯০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মূলত আড়তদার, কমিশন এজেন্ট ও আমদানিকারকদের কারসাজিতে খুচরা বাজারে মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে।
কিছু কমিশন এজেন্ট নৈরাজ্যের সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে তৌহিদুল ইসলাম বলেন, খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা মিয়ানমারের পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রির জন্য প্রতারণার কৌশল নিয়েছে। অভিযান চলাকালীন মূল্যতালিকায় মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম ৬০-৬৫ টাকা লিখে রাখলেও বেশ কয়েকটি দোকানের হালখাতা পরীক্ষা করে দেখা যায়, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৯৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
‘সিলেটগামী একটি পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাকের চালান ঘেটে দেখা যায়, অছিউদ্দিন ট্রেডার্স তাদের নিজেদের আড়তে মূল্যতালিকায় মিয়ানমারের পেঁয়াজের দাম ৬০-৭০ টাকা লিখলেও সিলেটগামী ট্রাকের চালানে মূল্য লেখা ১১০ টাকা।’
এদিকে মূল্যতালিকা থেকে অধিক দামে পেঁয়াজ বিক্রির অপরাধে অছিউদ্দিন ট্রেডার্সকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। দোকানে সংরক্ষিত কাগজপত্র পরীক্ষা করে মিয়ানমারের পেঁয়াজের দামে কারসাজি ও প্রতারণার প্রমাণ পাওয়ায় মেসার্স খাতুনগঞ্জ ট্রেডিংকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমার হতে আসা ৫-১০ ভাগ পেঁয়াজ পঁচে গেছে। কিন্তু আড়তদাররা শতভাগ পঁচে গেছে বলে অধিক দামে বিক্রির অজুহাত দিচ্ছে। আমদানিকারক-কমিশন এজেন্টদের কারসাজিতেই পেঁয়াজের দাম মূলত এভাবে বেড়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১ অক্টোবর খাতুনগঞ্জে অভিযানের সময় পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখার অঙ্গীকার করেছিলেন খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা। এরপর পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও চলতি সপ্তাহে আবারো বাড়তে শুরু করে।