টিভিপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলার সঙ্গে পরিচালক ইফতেখার আহমেদ ফাহমির সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কিছু ছবি এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। আর এনিয়ে সাইবার অপরাধ বিভাগে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানালেন এই অভিনেত্রী।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন মিথিলা। সেখানে জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি ফাঁস হয়ে যাওয়া ছবি নিয়েও লেখেন নিজের ওয়ালে
ফেসবুকে মিথিলার পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো-
‘কী ঘটেছে তার কোনো ব্যাখ্যা দিতে আসিনি। বরং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার কিছু ব্যক্তিগত ছবি নিয়ে যা হয়েছে, সেই সম্পর্কে নিজের অবস্থান পরিস্কার করতে চাই। এসব ছবির কিছু বাস্তব, কিছু মনগড়া। আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করতে কিছু অপরাধী প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এগুলো অনলাইনে ছেড়ে দিয়েছে।’
এ বিষয়টি খোলাসা করে মিথিলা লেখেন ‘ফাহমির ফেসবুক প্রোফাইল হ্যাক হয়েছিল। তখনই অপরাধীরা খারাপ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য এগুলো খুঁজে নিয়েছে। এখানে ডেটিং শব্দটির ওপর জোর দিতে চাই, যার অর্থ আমরা একটি সম্পর্কে ছিলাম। সহজভাবে বললে দুটি মানুষ একে অপরের সঙ্গে জড়ালে ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত কাটায়, ছবি তোলে। প্রযুক্তির যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা এগুলো ভাগ করে নেয়। তবে নিজের গোপনীয়তা রক্ষা করতে না পারার দায় আমারই।’
তবে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় মোটেও লজ্জিত নন মিথিলা। পোস্টে তা সাফ জানিয়ে দিয়ে লিখেছেন, ‘আমার লজ্জা লাগছে এই ভেবে, দেশের কিছু কুৎসিত লোক আমার ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইচ্ছেমতো পোস্ট, শেয়ার ও ব্যবহারের সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে। আমার খ্যাতি ও ভাবমূর্তিকে অসম্মান করে তারা সাবস্ক্রিপশন বাড়াচ্ছে ও নানান খবর ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমাকে কার্যত ধর্ষণ করা হচ্ছে। আমার লজ্জা হয় সেইসব মিডিয়ার জন্য, বিশেষ করে কয়েকটি নিউজ পোর্টাল আমার অনুমতি ছাড়াই আমাকে উদ্ধৃত করে এই খবর প্রকাশ করেছে। অথচ আমি এ নিয়ে কখনোই কথা বলিনি বা কোনো বক্তব্য দেইনি। ঘরে-বাইরে, ভার্চুয়াল জগতসহ সর্বত্র যেকোনো জায়গায় নারীদের যৌন হেনস্তা করা হলে একইভাবে লজ্জিত ও ক্ষিপ্ত হই।’
নিজের অবস্থান পরিস্কার করে লিখেছেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমার সম্মান ও মর্যাদা শুধু আমার আকার আর পোশাকের কিংবা ব্যক্তিগত ছবির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। জীবনে কঠোর পরিশ্রম, সৃজনশীলতা ও শিক্ষার মাধ্যমে সব অর্জন করেছি। আমার অতীতের ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলো চুরি করে কিছু অপরাধীর কুকর্মের কারণে এসব ভেঙে যাওয়ার মতো ঠুনকো নয়।’
নিজেকে শান্ত রাখতে ও ইতিবাচক মনোভাবের ওপর জোর দিতেই গত ২৪ ঘণ্টা ফাঁস হওয়া ছবি নিয়ে মুখ খোলেননি বলে জানান মিথিলা। তার আশা ছিল, এর মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসতে পারবেন। তবে যেসব ফেসবুক গ্রুপ, পেজ ও অনলাইন পোর্টাল অনুমতি ছাড়া ফাঁস হওয়া ছবিসহ খবর প্রকাশ করেছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
সাইবার অপরাধ বিভাগে অভিযোগ জানানোর তথ্য দিয়ে মিথিলা হুঁশিয়ার করেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় যারা আমার মান-সম্মান নিয়ে খেলেছে সেই দুষ্কৃতিকারীদের চিহ্নিত করে ছাড়বো। শপথ করছি, নিজের জন্য এবং হ্যাকার ও সাইবার অপরাধীদের শিকার হওয়া সবার জন্য লড়বো।’
সবশেষে দুঃসময়ে পাশে থাকার জন্য পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মিথিলা। যদিও মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার পর স্ট্যাটাসটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট ভালোবেসে সংগীতশিল্পী তাহসানকে বিয়ে করেন মিথিলা। তাদের সংসারে আইরা তেহরীম খান নামে এক কন্যাসন্তান রয়েছে। তবে দু’জনের বনিবনা না হওয়ায় ২০১৭ সালে তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় মিথিলার।
জয়নিউজ/পিডি