বিদেশ থেকে আমদানি করা গার্মেন্টসের বিভিন্ন কাঁচামাল চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে ছাড়তে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল নানা অনিয়ম। এ নিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানি হতে হয় সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীদের। বিষয়টি কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে জানালেও বন্ধ হয়নি হয়রানি।
এদিকে দিনের পর দিন জমতে থাকা ক্ষোভ সোমবার (১৮ নভেম্বর) পরিণত হয় বিক্ষোভে। সোমবার দুপুর থেকেই কর্মবিরতিতে যান সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারীরা।
সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারী সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম কাস্টমসের সৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেশের স্বার্থে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে চাইলেও কিছু দুর্নীতিবাজের কারণে তা সম্ভব হয় না। কোনো কর্মকর্তা ফাইলের কাজ এগিয়ে নিলেও অপর কর্মকর্তা তা দেখেন সন্দেহের চোখে। লেগে থাকেন একে অপরের পেছনে। মূলত গার্মেন্টস কাঁচামাল আমদানি ছাড়াতে চলে নানা হয়রানি। দিনের পর দিন এভাবে চলতে থাকায় পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকেই সোমবার সিঅ্যান্ডএফ র্কমচারীরা বিক্ষোভ শুরু করে কাস্টম হাউজে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিঅ্যাডএফ কর্মচারী নেতা জয়নিউজকে বলেন, যারা দোষ করবেন তারা শাস্তি পাক, এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু দিনের পর দিন এভাবে গণহারে হয়রানি আর কত সহ্য করবো।
কর্মকর্তাদের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এর মূলে রয়েছে অনৈতিকভাবে অর্থ আদায়।
সিঅ্যান্ডএফ সূত্র মতে, মূলত সাবটিম ১২ এবং ১৩-তে এই সমস্যা প্রকট। চট্টগ্রাম কাস্টমে কাপড়ের মান পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। এছাড়া এইচএস কোড পরিবর্তনসহ অপ্রাসঙ্গিক নানা প্রসঙ্গ উত্থাপন করে অহেতুক সময়ক্ষেপণ করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
কোনো কর্মকর্তা যদি নিয়ম মেনে ফাইলের কাজ করেন তখন অন্য কর্মকর্তারা উনার পেছনে লেগে থাকেন। তাই সৎ কর্মকর্তারা আগ্রহ নিয়ে কাজ করতে চান না। যার ফলে দোষ আর চাপ পড়ে মালিক ও কর্মচারীদের ঘাড়ে।
জানতে চাইলে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট র্কমচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন জয়নিউজকে বলেন, গণহারে দোষ দেওয়া অন্যায় হলেও চট্টগ্রাম কাস্টমে গার্মেন্টস ডিভিশনে এই কাজ চলেই আসছে। আমরা চাই যারা দোষ করবেন তারাই শাস্তি পাবেন। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতেই বিক্ষোভ দেখিযেছেন সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীরা।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আকবর হোসেনের সঙ্গে আলাপ করে কর্মচারীরা কাজে যোগ দিয়েছে। কমিশনার ঢাকা থেকে এলে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি আকতার হোসেন জয়নিউজকে বলেন, আলোচনা করেই কর্মবিরতি সমাপ্ত করে কর্মচারীরা কাজে যোগ দিয়েছেন। আগামীকাল (মঙ্গলবার) কমিশনার সাহেব বৈঠক করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
এ ব্যাপারে কথা বলতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আকবর হোসনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জয়নিউজ/বিআর