অনেক আগেই হারিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেন তার ঐতিহ্য আর রঙিন সাজ। এখন আর আগের মতো শাটল সাজেনা রঙিন সাজে। কেউ গেয়েও উঠেনা ‘এই মুখরিত জীবনের চলার বাঁকে অজানা হাজার কত কাজের ভিড়ে, ছোট্টবেলার শত রঙ করা মুখ সুর তোলে, আজও এই মনকে ঘিরে।’
কিংবা পড়ন্ত বিকেল ক্যাফেটেরিয়ায় এক কাপ চা গরম তৃষ্ণায় অজস্র এলোমেলো শব্দের ভীড়ে তোমার শীতল চোখ।
শাটলের এই হারানো ঐতিহ্য আর রঙিন সাজে শাটল ট্রেন যদি রাজপথে দেখা মিলে তাহলে যে কেউ অবাক হওয়ার কথা! আবার তা যদি হয় কয়েক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছুটে চলা। তাহলে তো আর কথাই নেই।
হ্যাঁ, এমনটাই হয়েছিল চবির অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের দুই দিনব্যাপী পুনর্মিলনী উৎসবের প্রথম দিনের র্যালিতে। হাজারো সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে রঙিন সাজে, ঢোল আর হরেক রকমের বাজনার সুরে ছুটে চলছিল চবির শিক্ষার্থীদের আবেগের শাটল ট্রেন।
‘প্রাণের উৎসবে মাতি উল্লাসে’- স্লোগানে চবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ১ম পুনর্মিলনী উৎসব এক করেছে হাজার শাটল প্রেমীদের। যে শাটলে মিশে আছে তাদের হাজারো স্মৃতি আর আবেগ।
উৎসবে যোগ দিতে আসা চবি হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী দিলশাআরা জয়নিউজকে বলেন, আমাদের সময় শাটল ট্রেন মানেই ছিল উৎসব আর আনন্দের জায়গা। ক্লাস করে সারাদিনের ক্লান্তি ভুলে যেতাম শাটলে বড় ভাই আর বন্ধুদের গলা ফাটিয়ে গান শুনে। তখন খুব ইচ্ছে করত তাদের সঙ্গে গলা ফাটিয়ে গান করি। আজ র্যালিতে শাটল ট্রেন দেখে আমার মনে হচ্ছে, এইতো বুঝি ক্যাম্পাস যাচ্ছি সবাই। দিনগুলো এখন খুব মনে পড়ে। কত সুন্দর ছিল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলি।
বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ান জয়নিউজকে বলেন, র্যালিতে এসে শাটল ট্রেন দেখে ক্যাম্পাস জীবনের শাটলে, ঝুপড়িতে আর ফ্যাকাল্টিতে ফেলে আসা স্মৃতি মনে পড়ে গেল। ফেলে আসা দিনগুলো আসলেই ভালো ছিল।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নুরুল আজিম জুয়েল বলেন, শাটলে কত স্মৃতি আমাদের। কত রঙিন ছিল ক্যাম্পাসের দিনগুলো। কিন্তু এখন ফেইসবুকের খাতিরে দেখি শাটল আগে রুপে নেই। কোনটা নরমাল ট্রেন আর কোনটা শাটল বুঝার জো নেই। ছোট ভাইদের স্ট্যাটাস পড়ে বুঝতে হয় এটাই শাটল। আবেগের স্মৃতিগুলো এভাবে মলিন হয়ে গেলে খারাপ লাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটা জায়গা আমাদের আবেগ। এসব স্মৃতি নিয়ে এতদিন পর সবার সঙ্গে সময় কাটাতে পেরে স্মৃতিকাতর হয়ে গেলাম।