জনগণের দোরগোড়ায় পুলিশের সেবা পৌঁছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করছে পুলিশ। সাধারণ মানুষের মন থেকে পুলিশভীতি দূর করতে প্রতিনিয়ত নানা উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। দেশব্যাপী কমিউনিটি পুলিশের জরুরি সেবা-৯৯৯ ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। অপরাধ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে জানার পাশাপাশি অপরাধ নিয়ন্ত্রণেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বিট্রিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম- মহান সবকিছুর শুরুটা চট্টগ্রাম থেকে। কমিউনিটি পুলিশের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। জনবান্ধব পুলিশিংয়ের অনেককিছুই চট্টগ্রাম থেকে শুরু। চট্টগ্রাম মহানগর কমিউনিটি পুলিশিং দেশের সবচেয়ে আলোচিত এবং কার্যকর ইউনিট। চট্টগ্রাম কমিউনিটি পুলিশিংয়ের অনেক কার্যক্রম পরে জাতীয়ভাবে নেওয়া হয়েছে এমন নজিরও আছে।
কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে শুরু হয়েছিল ‘হ্যালো ওসি’। সেবা দিতে পুলিশের দ্বারে জনগণ নয়, জনগণের দ্বারেই আসছে পুলিশ- এ কনসেপ্টকে ধারণ করে সিএমপির ১৬ থানায় চালু করা হয়েছিল হ্যালো ওসি। এ সেবার আওতায় এলাকায় এলাকায় গিয়ে বুথ খুলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বসে থাকেন। বলেন জঙ্গিবাদের কুফলের কথা, শোনেন মাদকসহ নানা সমস্যার কথা। স্পটে বসেই কিছু সমস্যার সমাধান করে দেন। বাকিগুলোর ক্ষেত্রে আইনি সহায়তার আশ্বাস দেন থানার বড় কর্তা।
পুলিশের ব্যতিক্রমধর্মী এ সেবায় খুশি সাধারণ মানুষ। এমনকি সিএমপির নতুন এ সেবার বিষয়ে জানতে সুদূর আমেরিকা থেকে ছুটে আসেন পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা। তাঁরা প্রশংসা করেছেন সিএমপির এ সেবা কার্যক্রমের।
হ্যালো ওসির পর এবার এসেছে হ্যালো পুলিশ কমিশনার। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান চালু করেছেন হ্যালো পুলিশ কমিশনার- সিএমপি।
গত ১৬ নভেম্বর Hello Police Commissioner Chattogram Metropolitan Police- CMP নামে ফেসবুক পেইজে লিখেন, প্রিয় নগরবাসী চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় যেকোনো ধরণের আইনগত সহায়তা প্রদানের জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত। এ লক্ষ্যে আমাদের নতুন উদ্যোগ- Hello Police Commissioner…fb page। এখন থেকে আপনি সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন এ পেইজে।
এরপর থেকে পেইজে পুলিশি বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন সেবার তথ্য এসএমএসে কিভাবে পাওয়া যাবে তা জানানো হচ্ছে এ পেইজে।
এদিকে পুলিশ কমিশনারের এ ব্যবস্থাকে স্বাগত জানিয়েছেন সচেতন নগরবাসী। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কেএম সাইফুল আলম জয়নিউজকে বলেন, সিএমপি কমিশনারের উদ্যোগটি খুব্ই প্রসংশনীয়। তবে দেখতে হবে পুলিশ কমিশনারের ওই পেইজে অভিযোগ করলে ফিডব্যাক কত তাড়াতাড়ি আসে। নাকি ওনি নির্দেশনা দেওয়ার পর কর্মকর্তারা সেটি নিয়ে গড়িমসি করে। তাহলে মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হবে এবং এ সেবা নিয়ে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হবে।
স্কুলশিক্ষক শারমিন আক্তার জয়নিউজকে বলেন, তথ্য প্রযুক্তির যুগে এ ধরণের আয়োজন খুবই ভালো। আমরা যেখানে থানায় যেতে ভয় পাই, সেখানে পুলিশ কমিশনারকে অভিযোগ জানাতে পারবো এটি সত্যিই স্বপ্নের মতো। কারণ বড় বড় কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করা অনেকসময়ই সম্ভব হয় না।
এ ব্যাপারে যোগযোগ করা হলে সিএমপি কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান জয়নিউজকে বলেন, আমরা চাই মানুষের মধ্যে কোনো পুলিশভীতি না থাকুক। জনগণ যাতে আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে তাই এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে খুব সাড়া পাচ্ছি। জনগণ যদি আমাদের সহযোগিতা করে তাহলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ অনেকটা সহজ হবে।
একদিন এ উদ্যোগ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে এমনটিই আশা সিএমপি কমিশনারের।