মিথ্যা ঘোষণা কিংবা পরিমাণ কম দেখিয়ে পণ্য আমদানি করে রাতারাতি ধনী হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। মাঝে মাঝে কিছু বিদেশি পণ্য আটক হলেও বেশিরভাগ পণ্যই তারা কৌশলে ছাড়িয়ে নেয়।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তথ্যমতে, দেশে যে পরিমাণ পণ্য বিভিন্ন মাধ্যমে অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করে এর ৮ থেকে ১০ শতাংশ উদ্ধার করা হয়। বাকি ৯০ শতাংশেরও বেশি বিদেশি পণ্য উদ্ধার করা সম্ভব হয় না।
শুল্ক গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, কিছু ব্যবসায়ী এইচএস কোড পরিবর্তন করে পণ্য আমদানির যোষণা দেয়। বিশাল অঙ্কের কর ফাঁকি দিতেই তারা এটি করে। এরপর দ্রুত পণ্য অ্যাসেসমেন্ট করে বন্দর থেকে পণ্য খালাস করে নিয়ে যায়।
আবার অনেকে আমদানি পণ্যের পরিমাণ কম দেখিয়ে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের সহায়তায় কর ফাঁকি দিচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সতর্কতার পরও কৌশলে তাদের চোখে ধুলো দিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশে অবৈধভাবে সবচেয়ে বেশি আসে স্বর্ণ। এছাড়া বিদেশি সিগারেট এবং বিভিন্ন যন্ত্রপাতিও অবৈধভাবে আসে।
মিথ্যা ঘোষণায় সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় ফ্রেব্রিকস। এ খাতে পণ্যের পরিমাণও কম দেখানো হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে স্বর্ণ ও বিদেশি সিগারেটই সবচেয়ে বেশি অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করছে। গত জুলাইয়ে ৪৭২ কেজি, আগস্টে ৭০৯ কেজি এবং সেপ্টেম্বরে ৭৭৫ কেজি স্বর্ণ আটক করা হয়।
একইভাবে আটক করা হয়েছে বিদেশি সিগারেটও। জুলাইয়ে আনুমানিক ২৩ লাখ টাকার, অক্টোবরে ২৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকার এবং সেপ্টেম্বরে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার সিগারেট আটক করা হয়।
মিথ্যা ঘোষণায় চালান আমদানি উদ্ঘাটন করে আদায় করা হয়েছে বাড়তি রাজস্বও। চলতি বছরের জুলাইয়ে ১২ কোটি ১৩ লাখ টাকার, আগস্টে ১৭কোটি ৫৮ লাখ টাকার এবং সেপ্টেম্বরে ১৬ কোটি ৬২ লাখ টাকার বাড়তি রাজস্ব আদায় করা হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আবদুল হাকিম জয়নিউজকে বলেন, আমদানিকারকদের আইনের প্রতি যেমন সম্মান দেখাতে হবে তেমনি তাদের মাঝে দেশাত্মবোধও থাকতে হবে। সর্বোপরি আমাদের বিদ্যামান আইনের সঠিক প্রযোগ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন ,আমাদের জনবল সংকট প্রকট। এর মাঝেও আমরা আমাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। দেশের অথর্নীতির আকার দিন দিন বাড়ছে। তাই আমাদের জনবল বাড়াতে হবে। উন্নতমানের যন্ত্রপাতি স্থাপন করতে হবে। বাড়াতে হবে কাজের পরিধি। তবেই এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে।
জয়নিউজ