কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিদারুল ফেরদৌসের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত চলাকালীন সময়ে সাক্ষীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ.ন.ম শহিদ উদ্দিন ছোটনের নেতৃত্বে এ হামলায় রুহুল আমিন, দেলোয়ার ও মফিজ আলম আহত নামে তিনজন আহত হন। আহতদের কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হাইকোর্টের আদেশে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মসহ আরো বেশ কয়েকটি অভিযোগে কুতুবদিয়া থানার ওসি দিদারুল ফেরদৌসের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।শনিবার (৩০নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টায় তদন্ত চলাকালে কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে সাক্ষীদের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-িসহকারী পরিচালক শরিফ উদ্দিন জয়নিউজকে বলেন, ওসি দিদারুল ফেরদৌসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে কুতুবদিয়ার মনোয়ার ইসলাম মুকুল নামের এক ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। তার তদন্তভার দেওয়া হয় চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়কে। আমার নেতৃত্বে দুদকের একটি টিম ওসির বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতি ও নিরহ লোকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগের তদন্তকাজ শুরু করি। এসময় কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে আমরা কথা বলি। অনেকজন সাক্ষী দিয়েছেন। এরইমাঝে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ওসির পক্ষ হয়ে বড়ঘোপ চেয়ারম্যান ছোটনের নেতৃত্বে একদল লোক আমাদের কাছে সাক্ষী দেওয়া তিনজনের ওপর হামলা চালায়। পরে আহত তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হামলার জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া প্রধান অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ছোটনকে দ্রুত আটক করার জন্য বলা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সকালে ওসি দিদারুল ফেরদৌস দুদক তদন্ত শুরু করার পর থেকে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ব্যর্থ হওয়ার পর সাক্ষীদের সাক্ষী না দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যান ছোটনের কাছে যান ওসি। এবার চেয়ারম্যান ছোটন সাক্ষীদের ভয় দেখান। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হওয়ার পর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়।
তবে ওসি দিদারুল ফেরদৌস জয়নিউজকে বলেন, সকালে দুদক আমার বিরুদ্ধে তদন্তকালে তাদের য়থেষ্ট সহযোগিতা করেছি। বিকালে জানতে পারি বেশ কয়েকজন সাক্ষীকে হামলা করা হয়েছে। দুদকসহ আমরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করি। চেয়ারম্যান ছোটন কোনোভাবে আমার পক্ষ হয়ে হামলা করেনি। তিনি কেন হামলা করেছে তা আমার জানা নেই।
হাইকোর্টে রিটকারী মনোয়ারুল ইসলাম মুকুল বলেন, নিরহ লোকদের অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো, ঘুষ বাণিজ্য, দুর্নীতিসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে ওসির বিরুদ্ধে প্রথমে দুদক কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করি। তারা কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় হাইকোর্টে ওসির বিরুদ্ধে একটি রিট পিটিশন দায়ের করি। দুদকের একটি টিম সকালে তার তদন্ত করতে আসলে স্বাক্ষীদের ওপর হামলা চালায় চেয়ারম্যান ছোটন।
এবিষয়ে জানতে বড়ঘোপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছোটনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জয়নিউজ/গিয়াস/পিডি