চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে তৎপর হয়ে উঠেছে নেতাকর্মীরা। এছাড়া সম্মেলন নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। তবে সব ছাপিয়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রে, কে হচ্ছেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি?
বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এমএ সালাম, নাকি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী- কে হচ্ছেন সভাপতি? আর সভাপতির উপরই নির্ভর করছে কোন উপজেলা থেকে হবে সাধারণ সম্পাদক।
উত্তর জেলার রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের কর্তৃত্ব রয়েছে। তাই যিনিই সভাপতি হোন না কেন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফকে বাদ দিয়ে কিছুই হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নেতৃত্ব নির্বাচন কী ভোটের মাধ্যমে নাকি সমঝোতায়- তা নিয়েও চলছে আলোচনা। তবে সভাপতি-সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে নতুন মুখ আসতে পারে বলে দলের কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড থেকে ইতোমধ্যে আভাস পাওয়া গেছে। তবে সম্মেলনে সমঝোতা না হলে ভোটেই নেতৃত্ব নির্বাচন করবে উত্তরের সাত উপজেলার নেতাকর্মীরা।
এদিকে সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার পর ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন নুরুল আলম চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক হন এম এ সালাম। এরপর গত ২৭ জানুয়ারি নুরুল আলম চৌধুরীর মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন রাউজানের এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।
আরো পড়ুন: উত্তর জেলা আ’লীগের সম্মেলনের স্থান পরিবর্তন
ইতোমধ্যে উত্তর জেলার আওতাধীন সাত উপজেলার সম্মেলন শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ফটিকছড়ি উপজেলায় সম্মেলন হয়েছে দুই বছর আগে। আর সম্মেলনগুলো ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজেরা উপস্থিত থেকে শেষ করেছেন। তবে প্রত্যেক উপজেলা সম্মেলনে ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছিল।
সূত্র বলছে, উত্তর জেলায় বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামের একটি বিশেষ বলয় রয়েছে। দীর্ঘদিন সাধারণ সম্পাদক থাকার পর তৃণমূল থেকে দাবি উঠেছে তাঁকে সভাপতি করার। এছাড়া ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গেও সালামের বেশ সখ্যতা রয়েছে। তাই অনেকেই এ পদে সালামকে এগিয়ে রাখছেন।
অপরদিকে গত একবছর ফজলে করিম চৌধুরী উত্তরের বিভিন্ন উপজেলায় চষে বেড়িয়েছেন। তিনিও এবার কোমরবেঁধে নেমেছেন সভাপতি হওয়ার জন্য। তাই সভাপতি পদে কঠিন সমীকরণের সম্মুখীন হতে হবে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ পালিত, নির্বাহী সদস্য ও মিরসরাই উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, সদ্য বিদায়ী মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য শেখ আতাউর রহমান। এছাড়া বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ইউনুচ গণি চৌধুরী, জসীম উদ্দিন, বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার ও এটিএম পেয়ারুল ইসলামসহ কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে।
দুই গুরুত্বপূর্ণ পদে কারা আসছেন সেই বিষয়ে নিশ্চিত করে কেউ বলতে না পারলেও দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকেই দৃষ্টি নেতা-কর্মীদের। তিনি যোগ্য, ত্যাগী, সততা, দলের দুঃসময়ের কাণ্ডারী এবং সংসদীয় আসন উপহার দেওয়া- এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে যোগ্য নেতা নির্বাচন করতে পারেন বলে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা মনে করছেন।
আগামী শনিবার (৭ ডিসেম্বর) নগরের কাজীর দেউড়ির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। সম্মেলনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাতটি উপজেলা ও ৯টি পৌরসভার ৩৬৮ কাউন্সিলরের উপস্থিত থাকারও কথা রয়েছে।