সড়ক নয়, এটি যেন কোনো জলাশয়। শীতের শুষ্ক মৌসুমেও বান্দরবান পৌরসভার কালাঘাটা সড়কে হাঁটু পানি। খানাখন্দে ভরপুর সড়কে হাঁটু পানি জমে থাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা দুর্ঘটনাও। ময়লা নোংরা পানির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে পৌরসভার তিন নং ওয়ার্ডের কালাঘাটা, ফ্রেন্সিঘোনা ও বড়ুয়ারটেক পাড়ার বাসিন্দারা।
এছাড়াও চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে রোয়াংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন অফিস ও স্কুল-কলেজে যাওয়া লোকেরা। ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে সড়কের দুপাশের দোকানগুলোতেও। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে ময়লা-আবর্জনার মিশ্রিত নোংরা পানিগুলো থেকে।
পৌরসভার স্থানীয়রা জানায়, বান্দরবান পৌরসভার তিন নাম্বার ওয়ার্ডটি হচ্ছে অপরিকল্পিত এবং নোংরা আবর্জনায় পরিপূর্ণ এলাকা। এই ওয়ার্ডের কালাঘাটা, ফ্রেন্সিঘোনা, বড়ুয়ারটেক, বাহাদুর নগরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে পাহাড়ি-বাঙালি কয়েক হাজার পরিবার বসবাস করে। এছাড়াও সমাজসেবা পরিচালিত অনাথ শিশুদের ঠিকানা ‘শিশু পরিবার’ ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিসও রয়েছে।
বাহাদুর নগর থেকে বড়ুয়ারটেক পর্যন্ত জলাবদ্ধতায় অফিস এবং স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনা যেন কয়েকগুন বেড়েছে। শীত কিংবা বর্ষা সারাবছরই সড়কটির অবস্থা অনেকটা একই রকম। পৌরসভার তিন নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছাড়াও রোয়াংছড়ি উপজেলায় যাবার বিকল্প সংযোগ সড়কও এটি।
কালাঘাটার বাসিন্দা মিলন, টিটু ও নয়ন অভিযোগ করে জয়নিউজকে বলেন, সড়কটির সমস্যা দীর্ঘদিনের। পাহাড় কেটে বসতি স্থাপনের ফলে বৃষ্টিতে মাটি ধুয়ে এসে ভরে গেছে ড্রেনগুলো। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় মানুষের ব্যবহারের পানিগুলো সরে যাওয়ার পথ পাচ্ছেনা। অপরিকল্পিত বসতি নির্মাণ এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ঘরবাড়িতে ব্যবহৃত ময়লা-আবর্জনাযুক্ত নোংরা পানিগুলো রাস্তায় জমে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
বর্ষা এবং শুস্ক মৌসুমে এই সড়কের অবস্থা একই রকম। দূর থেকে নতুন যে কারোরই মনে হতে পারে, এটি সড়ক নয়, জলাশয়! সড়কগুলো খানাখন্দেও ভরপুর। কিন্তু কর্তৃপক্ষ উদাসীন। যেন দেখার কেউই নেই।
গণপরিবহনের চালক আবু জাফর ও মো. মাসুস জয়নিউজকে বলেন, নতুনব্রিজের পর থেকে তুমব্রু পাড়া রাস্তার মুখ পর্যন্ত সড়কটি সম্পূর্ণ ভাঙা। সড়কের মধ্যখানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তে ভরপুর সড়কটি। এছাড়া শিশু পরিবার গেট থেকে বড়ুয়ারটেক মোড় পর্যন্ত সড়কটি জলাবদ্ধতায় নোংরা পানিতে ডুবে থাকে সারাবছর। এটি জলাশয় নাকি রাস্তা দূর থেকে দেখে বোঝার কোনো অবকাশ নেই। ভাঙা সড়কে গাড়ি চালানোর কারণে প্রতিদিনই গাড়ির কোনো না কোনো যন্ত্রাংস নষ্ট হচ্ছে। সড়কের বেহালদশায় প্রায় সময় ঘটছে দুর্ঘটনাও।
পৌর কাউন্সিলর অজিত দাশ জয়নিউজকে বলেন, মাটি জমে পানি নিস্কাশনের রাস্তাগুলো ভরে গেছে। পানি অপসারণের কাজ শুরু করতে সক্ষম হয়েছি। পানি সরে গেলে বালি-কংক্রিট ফেলে রাস্তাটি সংস্কার করা হবে।
এ বিষয়ে বান্দরবান পৌরসভার মেয়র মো. ইসলাম বেবী জয়নিউজকে বলেন, পাহাড়ের মাটি জমে গিয়ে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়েছে। ব্যবহারের পানি সড়কে জমে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ভাঙা সড়ক সংস্কার কাজও করা হবে। পৌরবাসীর ভোগান্তি লাঘবে উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে পৌর এলাকায়।