রাউজানে গহিরার কোতোয়ালিঘোনা এলাকায় বরযাত্রী খাওয়াতে না পারায় বিয়ের ৬ মাসের মাথায় স্বামীর সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিচ্ছেদ হলো রিমা আকতারের। এছাড়াও বিচ্ছেদের পর শ্বশুরালয়ে রেখে দেওয়া ১১ মাসের দুধের শিশুটি ১৪ দিন পর ফিরেছে মায়ের কোলে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিশু ও শিশুটির মাকে আদালতে পাঠান।
জানা যায়, দুই বছর আগে উপজেলার গহিরার কোতোয়ালিঘোনা এলাকার আব্দুল মালেকের নতুন বাড়ির সুলতান আহমেদের ছেলে সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে ৮ লাখ টাকা কাবিনমূলে হাটহাজারীর মেখলের মো. ইউনুসের মেয়ে রিমা আকতারের বিয়ে হয়। বরযাত্রী খাওয়াতে না পারায় বিয়ের ৬ মাসের মাথায় স্বামীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘মোহরে ফাতেমী’ র মাধ্যমে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা কাবিননামা করা হয়।
এরপর থেকে বিভিন্ন অজুহাতে রিমা আকতারকে নির্যাতন করে তার স্বামী। এরমধ্যে ১১ মাস পূর্বে জন্ম হয় শিশু হুমায়রা জান্নাতের। তারপরও নির্যাতন থেমে থাকেনি। একপর্যায়ে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত হয় মোহরে ফাতেমীর ধার্য কাবিনমূলে।
১ ডিসেম্বর তাদের স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে সালিশি বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্ট্যাম্পের মাধ্যমে কথিত বিবাহবিচ্ছেদ হয়। রেখে দেওয়া হয় ১১ মাসের দুধের শিশু হুমায়রা জান্নাতকে।
এসময় রীমা আক্তার শিশুকে পাওয়ার জন্য সবার হাত-পা ধরে শত চেষ্টা করলেও সন্তানকে দেওয়া হয়নি তাকে। পরে ৪ ডিসেম্বর আদালতে একটি অভিযোগ দেন তিনি।
আদালতের নির্দেশে রাউজান থানা পুলিশ শনিবার রাতে শিশুটি উদ্ধার করে থানায় এনে মায়ের কোলে তুলে দেন। পরে তাদের রোববার দুপুরে আদালতে পাঠিয়ে দেন।
গহিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বাশি জয়নিউজকে বলেন, তিনবার সময় দিয়েছিলাম, এরপরও মেয়ে সংসার করার পক্ষে ছিল না। পরে আমরা বিবাহবিচ্ছেদ করেছি নিয়ম অনুসারে।
কোন কাবিনমূলে বিচ্ছেদ করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বরযাত্রী খাওয়াতে না পারায় প্রথম কাবিননামা বাতিল করে দিয়ে দ্বিতীয় কাবিননামা করেছিল বলে জেনেছি। তাই পরবর্তী কাবিনমূলে (মোহরে ফাতেমী) বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। সন্তানকে নিতে না চাওয়ায় আমরা বাবার কাছে দিয়ে দিই।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেপায়েত উল্লাহ জয়নিউজকে বলেন, বিয়ের সময় আসবাবপত্র নেওয়ার পরও বরযাত্রী খাওয়াতে না পারায় ৮ লাখ টাকার কাবিন ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা করে। পরে বিবাহবিচ্ছেদ করে দেয়। শিশুটিকে বাবা রেখে দেওয়ার পর আমরা আদালত থেকে একটা বাচ্চা উদ্ধারের আবেদন পেয়ে আমরা শিশুটি উদ্ধার করেছি। রোববার আদালতে পাঠিয়েছি।