পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল নেমেছে। আগামী মার্চ পর্যন্ত এই ঢল থাকবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কক্সবাজারের সব হোটেল-মোটেলই এখন পর্যটকে ভরপুর। অনেকে হোটেল-মোটেলের বেশিরভাগ কক্ষ আবার অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জেলা প্রশাসন। তবে পর্যটকদের অভিযোগ, পর্যটকের ঢল থাকায় হোটেল-মোটেল মালিকরা বাড়িয়ে দিয়েছেন রুমভাড়া।
তবে হোটেল-মোটেলের দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েকজন ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাদের দাবি, অফ সিজনে যে পরিমাণ ডিসকাউন্ট দেওয়া হতো, এখন তা দেওয়া হচ্ছে না- তফাৎ শুধু এটুকুই।
তারা জানান, বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) থেকে প্রায় সব রুম বুকিং আছে। মূলত প্রতি বছর ডিসেম্বর থেকে পর্যটন মৌসুম শুরু হয় এবং তা চলে মার্চ পর্যন্ত। এ ধারাবাহিকতা এবারও বজায় রয়েছে। দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় এবার অসংখ্য পর্যটক কক্সবাজার ঘুরতে আসবেন বলে তারা আশাপ্রকাশ করেন।
ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সৈকত। তিনি জয়নিউজকে বলেন, পরিবার নিয়ে আনন্দঘন সময় কাটাতে এখানে আসলাম। আমিসহ পরিবারের সবার কক্সবাজার খুব প্রিয় জায়গা। এখানে চারদিন থাকব। সম্ভব হলে একদিন সেন্টমার্টিন ঘুরে আসবো।
রাজশাহী সরকারি কলেজের শিক্ষক ফয়েজ ও মুন্নি মির্জা বলেন, ছেলে মেয়েদের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে তাই প্রতিবছরের মতো এবারও ঘুরতে এলাম। আমাদের সবার পছন্দেই জায়গা কক্সবাজার। এখানে সবকিছুই সুন্দর, তবে হোটেল ভাড়াটা একটু বেশি। আমরা ডাবল বেডের একটি রুম নিতে আমাদের গুণতে হয়েছে ৩ হাজার টাকা।
এদিকে সিলেট থেকে আসা পর্যটক আজগর আলী চৌধুরী অভিযোগ করেন, সৌন্দর্যের এ নগরীর রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ। এর সঙ্গে রয়েছে যানজট। সবকিছুর দামও বাড়তি। সামান্য ওষুধ কিনতে গেছি সেখানেও নির্দিষ্ট দামের চেয়ে বেশি দাম রাখা হচ্ছে।
যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, পর্যটকদের যাতে কোনোভাবেই হয়রানি করা না হয় সেজন্য হোটেল মালিকদের প্রতি কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পর্যটকের ঢল সামলাতে প্রস্তুত কক্সবাজারে প্রায় সাড়ে চারশ’ ছোট-বড় হোটেল ও গেস্ট হাউজ। আশা করি এবারে কক্সবাজারে অতীতের চেয়ে বেশি পর্যটক আসবে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার (এসপি) জিল্লুর রহমান জয়নিউজকে বলেন, পর্যটন মৌসুম শুরু হয়েছে। এখন থেকে কক্সবাজারে বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসবে। সেজন্য আমাদের পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সবকিছু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শুধু বিচে নয় সব জায়গায় আমাদের পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) আবু নাসের চৌধুরী বলেন, পর্যটন মৌসুমে বাড়তি পর্যটকদের নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সৈকতের অন্তত ছয়টি পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি থাকবে বিচ কর্মীরা।
জয়নিউজ/শামীম