ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হয়ে ভারতে টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আছেন নরেন্দ্র মোদি। ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে একের পর এক কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে যাচ্ছেন।
তার শাসনকালে বিশেষ মর্যাদা হারিয়েছে পৃথিবীর ভূ-স্বর্গ খ্যাত কাশ্মীর। ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের রায়ও নিজের দলের পক্ষে গেছে। সম্প্রতি মুসলিমবিরোধী একপেশে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হয়েছে। তথাকথিত অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ভারতজুড়ে এনআরসির (জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন) তোরজোড় শুরু হয়েছে।
এসব কারণে তিনি ‘রক্ষণশীল’ হিন্দুদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। জনসভায় বক্তৃতা করতে গেলে সভাজুড়ে থাকে মোদির জয়ধ্বনি। মুহুর্মুহু হাততালিতে ফেটে পড়ে ময়দান। কিন্তু, শুক্রবার যেন তা হলো না। ছন্দপতন হলো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তৃতায়।
ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দেশের অন্যতম বড় বণিকসভা অ্যাসোচেমের বার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখছিলেন নরেন্দ্র মোদি। দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রী মোদির সেই বক্তৃতার দিকে নজর ছিল গোটা দেশের শিল্প সমাজের। অর্থনীতির বেহাল দশা থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী কী বার্তা দেন, সেদিকেই নজর ছিল ব্যবসায়ীরা। মোদি তার বক্তৃতায় দেশের অর্থনীতির শোচনীয় অবস্থার কথা স্বীকার করেন।
উল্টো দাবি করেন, অর্থনীতি সঠিক পথেই এগোচ্ছে। বলেন, দ্রুত আমরা ৫ ট্রিলিয়ন অর্থনীতির দেশে পরিণত হব। পাঁচ-ছয় বছর আগে দেশের অর্থনীতি রীতিমতো বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল। আমরা সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে বর্তমানে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে পেরেছি।
কিন্তু, মোদির এমন বাণী আশ্বস্ত করতে পারেনি উপস্থিত ব্যবসায়ীদের। সেভাবে হাততালিও পড়ছিল না প্রধানমন্ত্রীর কথাতে। তাই, বক্তৃতা থামিয়ে কিছুটা হলেও বিরক্তির সুরে মোদিকে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘কী ব্যাপার! হাততালির শব্দ এত কম কেন? আমি তো আর একটু হাততালি আশা করছিলাম। আপনারা মনে হয়, অতীতের পরিসংখ্যান এখনও মনে করে রেখে দিয়েছেন। আর না হয় আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছেন না। শুনলে আরও বেশি হাততালি পড়ত।’
প্রধানমন্ত্রীর এই অসন্তোষ প্রকাশের পর অবশ্য আর হাততালির অভাব পড়েনি। সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞান ভবন গর্জে ওঠে করতালির আওয়াজে।
জয়নিউজ/পিডি