বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামে আসছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় বিমানযোগে তিনি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। এরপর বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে আসবেন তথ্যমন্ত্রী।
বিষয়টি জয়নিউজকে নিশ্চিত করেছেন তথ্যমন্ত্রীর একান্ত সহকারী এমরুল করিম রাশেদ।
এদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপিকে চট্টগ্রামে বরণ করতে নানা প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ চট্টগ্রাম মুসলিম হাইস্কুল থেকে ১৯৭৮ সালে এসএসসি পাশ করে তৎকালীন ইন্টারমিডিয়েট কলেজে (বর্তমানে মহসিন কলেজ) ভর্তি হয়ে ওতপ্রোতভাবে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। নির্বাচিত হন কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে। এরপর চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সামনের কাতারে থেকে চট্টগ্রামের ছাত্রসমাজকে নেতৃত্ব দেন হাছান মাহমুদ।
তিনি ১৯৯০ সালে চাকসু নির্বাচনের জন্য গঠিত সর্বদলীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মনোনীত হন। রসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন কিছুদিন। সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব নেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের। উত্তাল ছাত্ররাজনীতির পাঠ চুকিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য একসময় ইউরোপ চলে যান। ভর্তি হন বিশ্বের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ ব্রিজ ইউনিভার্সিটি ব্রাসেলসে।
পাশাপাশি বেলজিয়াম আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার উদ্যোগ নেন। নির্বাচিত হন বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ব্রিজ ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ এশিয়াভিত্তিক স্টুডেন্ট ফোরামের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে আলোচনায় আসেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। এসময় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক রাজনীতির সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে।
পড়াশোনা শেষে বেলজিয়ামের লিমবার্গ ইউনিভার্সিটি সেন্টামের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ড. হাছান মাহমুদ। কিন্তু চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার এই সন্তানকে বিদেশের বিত্ত-বৈভব বেশিদিন আটকে রাখতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে বিদেশে শিক্ষকতা ও নিরাপদ জীবনের চাকরি ফেলে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
এসেই জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির (২০০১ সাল) সঙ্গে যুক্ত হন। এরপর যোগ দেন সভানেত্রীর বিশেষ সহকারী হিসেবে। কিছুদিনের মাথায় আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সে দায়িত্ব পালন করেন ড. হাছান মাহমুদ। সভানেত্রীর বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব পালন করেন ২০০৮ সাল পর্যন্ত। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর প্রথমে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পরে বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী এবং পদোন্নতি পেয়ে বন ও পরিবেশ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয় সরকারে হাছান মাহমুদ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান।