স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে এ বছরটিকে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতাই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন নগরজুড়ে ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
চসিক অর্থায়নে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ বাষির্কী উদযাপন উপলক্ষে নগরে আকর্ষনীয় স্থানে চারটি কাউন্ট-ডাউন ক্লক বসছে।
নগরের আন্দরকিল্লা পুরাতন চসিক ভবনের সামনে ‘এ’ ক্যাটাগরি একটি এবং সার্কিট হাউজের সামনে, আদালত ভবণ এবং শাহআমানত সেতু এলাকায় ‘বি’ ক্যাটাগরি তিনটি কাউন্ট-ডাউন ক্লক বসানো হচ্ছে।
সরকারের অভিন্ন মডেলের ক্লক স্থাপন করা হচ্ছে নগরে। এক্ষেত্রে ‘এ’ ক্যাটাগরির ক্লকের ক্ষেত্রে স্থাপন ও ১০০ দিন পর্যন্ত ব্যবস্থাপনায় ব্যয় হবে ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ৬০৯ টাকা, আর প্রতিটি ‘বি’ ক্যাটাগরির ক্লকের ক্ষেত্রে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ লাখ ৮২ হাজার ৮২৩ টাকা। এ চারটি কাউন্ট-ডাউন ক্লকের জন্য চসিকের ব্যয় হচ্ছে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৭৯ হাজার ৭৮ টাকা। চসিক এ ব্যয় বহন করছে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এ কাউন্ট-ডাউন ক্লক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে একযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, শুধু কাউন্ট-ডাউন ক্লক স্থাপনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি চসিক। সিটি মেয়র নাছির এই মুজিব বর্ষকে ঘিরে মশকমুক্ত পরিচ্ছন্ন সবুজ নগর, বঙ্গবন্ধুর নিবেদনে অমর একুশে বই মেলাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ কর্মসূচির আওতায় নগরের প্রতিটি ওয়ার্ডকে চারভাগে বিভক্ত করেছে।
মেয়র নাছির প্রতিটি ভাগে রাস্তা, ফুটপাত, গলি-উপগলি, নালা-নর্দমা ইত্যাদি যথাযথভাবে পরিস্কার করবে। এছাড়া মশারবংশ বিস্তাররোধ এবং মশার স্থান ধ্বংসকরণে কেমিক্যাল স্প্রে, বর্জ্য ফেলার স্থান ও সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন প্রতিমাসে দুইবার ছিটানো হবে।
এদিকে বিশেষ পরিস্কারকরণ, ডোর টু ডোর সেবকদের কাজের মানবৃদ্ধির জন্য কর্মশালা, চসিক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ হাসপাতাল, অফিস ও শপিং কমপ্লেক্স ইত্যাদি পরিস্কারকরণ, গৃহস্থালির বর্জ্যাদি নির্দিষ্টসময়ে নির্দিষ্টস্থানে ফেলার বিষয়ে ‘পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করুন’, ‘চট্টগ্রাম শহরকে সুস্থ রাখুন’ সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্মিলিত সচেতনতা বৃদ্ধির করা হবে।
এছাড়াও চসিক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্তকরণও রয়েছে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবারের পিতামাতাসহ অন্যান্য সদস্যদেরকে এ বিষয়ে উদ্বুব্ধ করতে পারে।
চসিকের এ কর্মসূচি ছাড়াও আগামী প্রজন্মের নাগরিকদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তুলে ধরা এবং মুজিববর্ষকে স্মরণীয়-বরণীয় করে রাখার নিমিত্তে নগরের বাটালি হিলে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, পাহাড়তলী শেখ রাসেল পার্ক এবং বঙ্গবন্ধু সড়কের বড়পুল গোলচত্বরের ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন করার ঘোষণা দিয়েছেন সিটি মেয়র।
মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সিটি মেয়র প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, মুজিব বর্ষের বছরব্যাপি কর্মসূচি ও অনুষ্ঠানমালা তেমনই জাকজমকপূর্ণ আকর্ষনীয় ও অনাড়ম্বরপূর্ণ হবে। এর জন্য চসিক যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
মেয়র আরও বলেন বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু একই মুদ্রার এপিট-ওপিঠ। বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে যেমন বঙ্গবন্ধুকে চিন্তা করা যায় না। তেমনি বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিলে অর্থহীন হয়ে পড়বে বাংলাদেশও। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে তা আমাদের জীবনে কাজে লাগাতে পারি তা হবে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা ও স্মরণ করার শ্রেষ্ঠ উপায়।
উল্লেখ্য, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শতবর্ষ পূর্ণ হতে যাচ্ছে আগামী ১৭ মার্চে। এদিনকে উপলক্ষ করে ‘মুজিব বর্ষ’ ঘোষণা দিয়েছেন সরকার। এই জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে শুরু হয়ে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত বছরব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে চসিক।