সরকারি চাকরিতে নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত অর্থাৎ আগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে কোটা পদ্ধতি না রাখার সুপারিশ করেছে কোটা পর্যালোচনা কমিটি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেন তারা।
সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ তথ্য জানান।
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় গত ২ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে সরকার। প্রাথমিকভাবে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও পরবর্তীতে আরো ৯০ কার্যদিবস সময় পায় এই কমিটি। এক মাস সময় থাকতেই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমরা কোটা নিয়ে প্রতিবেদন আজকে জমা দিয়েছি। আমাদের ফাইন্ডিংস হলো নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত অর্থাৎ আগে যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি বলা হতো, সেগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো কোটা থাকবে না। সচিব থেকে সহকারী সচিব পর্যন্ত পদগুলোয় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদগুলো মেধাভিত্তিক হবে।
বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনি ৩০ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, পশ্চাৎপদ জেলাগুলোর জন্য ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ কোটা পদ্ধতি সংরক্ষিত আছে। সব মিলিয়ে শতকরা ৫৬ ভাগ কোটা পদ্ধতিতে নিয়োগ চালু রয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবার প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক অনুমতি গ্রহণ করা হবে, অনুমোদনের পরে এটা কেবিনেটে (মন্ত্রিসভায়) উপস্থাপিত হবে। পরবর্তী কেবিনেট মিটিং হয়তো আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। কেবিনেটে পাস করে দিলে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে সচিব বলেন, আমরা আইন বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েছি তারা বলেছেন যে, এটা যেহেতু সরকারের পলিসি ডিসিশন তাই এটা আদালতের রায়কে স্পর্শ করবে না, এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে নিচের গ্রেডগুলোয় আগের মতো কোটা থাকবে।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কোটার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা ওটা যাচাই-বাছাই করে দেখেছি, আমরা বলেছি যে এখন কোটা না হলেও চলতে পারে।
৪০তম বিসিএসের কোটা থাকছে কিনা জানতে চাইলে সচিব বলেন, ওটাতে বলা আছে সরকার যদি ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয় সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেতনক্রম অনুযায়ী বর্তমানে সরকারি চাকরিতে গ্রেড সংখ্যা ২০টি। নবম থেকে ১৩তম গ্রেড সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) নিয়োগ দিয়ে থাকে। বিভিন্ন ক্যাডারে এক হাজার ৯০৩টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য গত ১১ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। বিজ্ঞপ্তিতে কোটা নিয়ে সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়।
জয়নিউজ/এডি/জেডএইচ