বান্দরবানের আলীকদম-থানচি সড়কের দু’ধার ও মাংগু মৌজার বির্স্তীণ বনভূমিতে এখন বনখেকোদের রামরাজত্ব। অভিযোগ আছে, বন বিভাগ মোটা অংকের মাসোহারার বিনিময়ে পালন করছে নিরব দর্শকের ভূমিকা। দীর্ঘদিন ধরে বৃক্ষনিধনকারীদের দাপটে পাহাড়গুলো বৃক্ষশুন্য হয়ে পড়ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন একশ থেকে দেড়শ গাড়ি কাঠ পাচার হচ্ছে এসব পাহাড় থেকে। অথচ সরকারও পাচ্ছেনা কোনো প্রকার রাজস্ব। একসময় এসব এলাকায় বনভূমি ছিল গাছপালায় পরিপূর্ণ। কিন্তু কতিপয় কাঠ ব্যবসায়ী অবৈধভাবে বন উজাড় করে আসছে এসব বনাঞ্চল।
সরেজমিনে দেখা যায়, আলীকদম থানচি সড়কের ১৩ কিলোমিটার থেকে ২৩ কিলোমিটার পর্যন্ত, মাংগু মৌজার মেনপা পাড়া, রেংইয়া পাড়া, রুইপা পাড়া, কলার ঝিরির আগা, আদু পাড়াসহ, তৈনফা মৌজার বিভিন্ন এলাকার প্রায় দুইশটিরও বেশি স্থানে গাছ কেটে স্তুপ করে রেখেছে পাচারকারী সিন্ডিকেট। মুষ্টিমেয় কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে পকেট ভারি করে প্রকাশ্যেই চলছে বন উজাড়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব গাছ কাটায় স্থানীয় মো. আলী সওদাগর, মো. ইসমাইল, মো. বেলাল, মো. ইমাম হোসেন, মো. হাবিব, মো. আলম, মো. শহিদুর রহমান, মো. আবুহান, শুক্কুর মৌলভী, মো. ওসমান, আব্দুছ ছবুরসহ বেশ কয়েকজন কাঠ ব্যবসায়ী জড়িত।
তবে শ্রমিকরা জানান, শুধুমাত্র পারিশ্রমিক বিনিময়ে তারা গাছ কাটেন। এসময় গাছ কাটার জন্য বেশ কিছু আধুনিক মেশিন দেখা যায় শ্রমিকদের কাছে। দ্রুত বেশি মাত্রায় গাছ কাটার জন্য এসব মেশিন ব্যবহার হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের একটি সমিতি আছে। সমিতি মণ প্রতি আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনকে ম্যানেজ করে। তার পরও আমরা সংশ্লিষ্ঠ বিভাগকে গাড়ি প্রতি টাকা দিয়ে থাকি।
অপর এক ব্যবসায়ী মো. আলী সওদাগর বলেন, আমরা ছোটখাট ব্যবসায়ী। ব্যবসা করে পরিবারের খরচ চালাই। এসব নিয়ে না লিখে অনেক কিছুইতো আছে লিখার মত। সেসব বিষয় নিয়ে লেখার পরামর্শ দেন এ প্রতিবেদককে।
১নং আলীকদম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন হতাশা প্রকাশ করে বলেন, বন ও পরিবেশ রক্ষায় আমরা আন্তরিক। কিন্তু আমাদের ক্ষমতা নেই, আমরা নিরুপায়।
আলীকদম ্উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সমরঞ্জন বড়ুয়া বলেন, বর্তমান সরকার পরিবেশ রক্ষায় বদ্ধপরিকর।সরকার কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু বন বিভাগের কর্মকর্তারা কাঠ পাচারকারীদের সঙ্গে আঁতাত করে বনভূমি ধ্বংস করছে। আমি পরিবেশ রক্ষায় সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করি।
এবিষয়ে লামা বন বিভাগের অধিনস্ত তৈন রেঞ্জ কর্মকর্তা শামসুল হুদা বলেন, উর্ধতন কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়া আমার মিডিয়াতে কোনো প্রকার বক্তব্য দিতে পারিনা। বে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দেন।
অপরদিকে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. কাইছার এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনিও উর্ধতন কর্মকর্তার দোহাই দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।