১৯৭১ সাল থেকে ভারত ও বাংলাদেশ একসঙ্গে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছে। দুই দেশের অর্থনীতি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারত সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেয়। আমাদের কাছে প্রতিবেশী প্রথমে। প্রতিবেশীদের মধ্যে বাংলাদেশ সবার আগে।
শনিবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরের পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লুতে ভারতীয় প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভারতের সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ভারত সফরে ৭টি এমওইউ সাইন করেন এবং ৩টি দ্বি-পাক্ষিক প্রজেক্ট উদ্বোধন করেন। আমাদের দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকগুলোতে সিকিউরিটি, বিজনেস, কানেকটিভিটি, ডিফেন্স, ডেভেলপমেন্ট, কো-অপারেশন, এনার্জি, এডুকেশনসহ দ্বি-পক্ষীয় সম্পর্কের প্রায় সকল বিষয়ে তারা আলোচনা করেছেন। আমাদের পলিসি হলো- একসঙ্গে সবার উন্নতি, একটাই লক্ষ্য অনুসরণ করে। আজকে আমাদের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা উল্লেখ করে সহকারী হাই কমিশনার বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা এবং ভারতের সেনাবাহিনী একসঙ্গে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে দুই দেশের মধ্যে স্থায়ী বন্ধন তৈরি করে গেছেন। আজকে আমাদের বন্ধন শুধুমাত্র ট্রেড, কর্মাস, সিকিউরিটি এবং বর্ডার ম্যানেজমেন্টের মতো ট্রেডিশনাল ক্ষেত্রসমূহে সীমাবদ্ধ নয়। আমাদের বন্ধন এখন কৌশলগত সব সম্পর্কের ঊর্ধ্বে।
তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের কমিটেড ডেভেলপমেন্ট পার্টনার। দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আমাদের জয়েন্ট ইনিশিয়েটিভ প্রমাণ করে আমাদের এ সহযোগিতা দুই দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়নে ভারত সব সময় পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেশী হিসেবে কিছু সমস্যা থাকতেই পারে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এ সমস্যাগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে খুব সহজেই সমাধান করা যাবে। আমরা আমাদের কূটনৈতিক ও অন্যান্য সম্পর্কগুলোকে সোনালী অধ্যায়ের ঊর্ধ্বে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।
অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ। ভারতের অর্থনীতির যে কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধি তা বিস্ময়কর। প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে আমরা বাংলাদেশের জনগণ এতে অত্যন্ত আনন্দিত। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যে সহানুভূতি ও ভালোবাসা বাংলাদেশের মানুষের প্রতি দেখিয়েছেন-তা দুর্লভ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জনের পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে ভারত সরকার যেভাবে আন্তরিক সহযোগিতা দিয়েছে- তা অবিস্মরণীয়।
মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আন্তরিকতার ফলে বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশের মধ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিসহ নানা সমস্যার সমাধান হয়েছে। খুবই কার্যকরভাবে নতুন উচ্চতায় উঠে গেছে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, ওয়াসিকা আয়েশা খান, খদিজাতুল আনোয়ার সনি, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, কক্সবাজার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ, বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার, চুয়েটের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রফিকুল আলম প্রমুখ।
জয়নিউজ/পিডি