চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদল সভাপতি জাহেদুল আফছার জুয়েলের ওপর হামলাকারী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল আলম জনিকে ঘটনা তদন্তে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। এ নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও।
ছাত্রদল সূত্রে জানায়, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের সামনে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১১টায় নগরের নাসিমন ভবনের সামনে হামলার শিকার হন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদল সভাপতি জাহেদুল আফছার জুয়েল। উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল আলমের নেতৃত্বে ৮/১০ জন ছাত্রদল নেতাকর্মী এ হামলায় অংশ নেয় বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা। ঘটনার পর কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বিষয়টিকে ‘হামলা নয়, একটু ধাক্কাধাক্কি’ বললেও মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহদপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জাহেদুল আফসার জুয়েলকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে, যা অপ্রত্যাশিত ও অনভিপ্রেত। ঘটনা তদন্তে মনিরুল আলম জনিকে আহ্বায়ক এবং জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি আনছুর উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে তদন্ত কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন উপস্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হলো।
এদিকে জনিকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ।
ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বলছেন, যার নেতৃত্বে হামলা হয়েছে তাকে ঘটনা তদন্ত করতে দেওয়া হাস্যকর। এর মাধ্যমে একটি চক্র ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে দোষীদের রক্ষার চেষ্টা করছে।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ জয়নিউজকে বলেন, সোমবার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে নাসিমন ভবন থেকে নামার পর জেলা ছাত্রদল সভাপতি জুয়েলের উপর অতর্কিত হামলা করা হয়। হামলায় নেতৃত্ব দেন সাধারণ সম্পাদক মনিরুল আলম জনি, যুগ্ম সম্পাদক তকি, হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নুরুল কবির তালুকদার, নুর উদ্দিন, নগর ছাত্রদলের শরীফুল ইসলাম তুহিন, রায়হানসহ ২০ জন। যা খুবই দুঃখজনক। এর চেয়ে আরো বেশি দুঃখজনক, যার নেতৃত্বে হামলা তাকে করা হয়েছে তদন্ত কমিটির প্রধান। এর মাধ্যমে মূল বিষয়টি ধামাচাপা পড়বে। ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত হবে।
এ বিষয়ে জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, ১৩ অক্টোবর ২০১৭ জাহেদুল আফছার জুয়েলকে সভাপতি ও মনিরুল আলম জনিকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৩ সদস্যের উত্তর জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। শুরু থেকেই বিতর্ক লেগে থাকে এই কমিটির পেছনে। বিতর্কিতদের দিয়ে উপজেলা কমিটি গঠন, দলীয় গ্রুপিং সৃষ্টিসহ নানা অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে। কমিটি গঠনের পর গত আড়াই বছরে দুই গ্রুপের মধ্যে একাধিকবার মারামারি হয়েছে।
জয়নিউজ