রাজনীতির মাঠে বৈরিতা থাকলেও বাণিজ্যের খাতিরে পটিয়ায় এক হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি। পটিয়ার শ্রীমাই খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, বিএনপি ও যুবদলের মধ্যে গড়ে উঠেছে ভ্রাতৃত্ব।
এদিকে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেতাদের ভ্রাতৃত্বে কাহিল অবস্থা শ্রীমাই খালের। অবৈধ বালি উত্তোলনে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে শ্রীমাই খালের বেড়িবাঁধ। আবার সরকারও বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধভাব বালি উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন স্থানীয় সাংসদ হুইপ শামশুল হক চৌধুরীর ছোট ভাই নবাব। তাঁর পক্ষে ভাটিখাইন যুবলীগের সভাপতি নাজিম উদ্দীন (বালু নাজিম) ও যুবলীগ নেতা হাসান শ্রীমাই খাল ও ভট্টাচার্য খালের বালি মাটি উত্তোলনে সহযোগী হিসাবে কাজ করছে।
এছাড়া পটিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর আলমের সহযোগিতায় দক্ষিণ জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি শাহজাহান চৌধুরী প্রকাশ বালু শাহজাহানও বালু উত্তোলনে জড়িত। তারা বড় দুই দলের অনুসারী হলেও অবৈধ বালির লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য করছেন একসঙ্গে।
এদিকে এভাবে বালি উত্তোলন চলতে থাকায় বর্ষায় খালের বেড়িবাঁধ ভেঙে পাহাড়ি ঢলে ভেসে যায় উপজেলার হাইদগাঁও, কচুয়াই, ভাটিখাইন ও ছনহরা ইউনিয়ন। এতে গৃহহীন হয়ে পড়ে শত শত পরিবার। নষ্ট হয়ে যায় লাখ লাখ টাকার ফসল।
অপর একটি সূত্রের অভিযোগ, অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ফায়দা পায় উপজেলা প্রশাসন এবং থানা পুলিশও। এ কারণেই শ্রীমাই খাল থেকে বালি উত্তোলন না করতে স্থানীয় সাংসদ হুইপ শামশুল হক চৌধুরী প্রশাসনকে নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার শ্রীমাই খাল থেকে অবৈধভাবে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৭০০ ট্রাক বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। এভাবে বালি উত্তোলনের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করলেও রহস্যজনক কারণে নীরব উপজেলা প্রশাসন।
সূত্র জানায়, উপজেলার শ্রীমতি খাল, চানখালী খাল ও খরনা খালের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন চলছে। পাশাপাশি লুট করা হচ্ছে এসব খালের মাটি। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় চলছে এ লুটবাণিজ্য। উপজেলার বাহুলী, শ্রীমাই, হাইদগাঁও, ভাটিখাইন ও খরনা এলাকা থেকে প্রতিদিন বালু উত্তোলন করে চলেছে বালুখেকোরা।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও পটিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাব্বির রহমান সানি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালান। অভিযানে বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন জব্দ করা হলেও গ্রেপ্তার করা যায়নি চক্রের কাউকে।
এদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বর্ষায় ভেঙে যাচ্ছে শ্রীমাই খাল, চানখালী খাল ও খরনা খালের দুই পাড়। এ কারণে হুমকির মুখে রয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দেবী চন্দ্রের বসতভিটা! তাঁর বাড়ি উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের শ্রীমতি খালের পাড়ে। উপসচিব বিষয়টি ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন বলে জানা গেছে।
জয়নিউজ/বিআর