কক্সবাজারের পেকুয়ায় বিক্ষুব্ধ জনতার ধোলাইয়ে দুই ডাকাত নিহত হয়েছে। এসময় গুরুতর আহত হয়েছে আরো এক ডাকাত।
গণধোলাইয়ে নিহত ডাকাতরা হলেন-জামাল হোসেন (৩৮) পিতা-মৃত আলমগীর ও কাউসার (২৬) পিতা-নাজিম উদ্দিন। নিহত দুই ডাকাতের বাড়ি শিলখালী ইউনিয়নের সাপেরগাড়া গ্রামে। আহত ডাকাত নাছির হোছাইন (৩০)। তিনি বারবাকিয়া ইউনিয়নের পাহাড়িয়াখালী এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে পেকুয়ার শীলখালী ইউনিয়নের দূর্গম পাহাড়ি সাপেরগারা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
জানা গেছে, পেকুয়ার দূর্গম একটি পাহাড়ি এলাকায় মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে প্রবাসির বাড়িতে হানা দেয় ডাকাত দল। এসময় ডাকাতদলের ছোঁড়া গুলিতে সদ্যবিবাহিত মো. নুরুন নবী (৩২) নামে এক প্রবাসী যুবক নিহত হয়।
নুরুন নবী পেকুয়ার শিলখালী ইউনিয়নের সাপেরগারা গ্রামের এলাকার মো. হাসান শরীফের ছেলে। একই ঘটনায় নিহতের মা ও ছোটভাইও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে।
নিহত দুই ডাকাতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ কক্সবাজার জেলা সদর হাসাপাতালে পাঠিয়েছে। গুরুতর আহত ডাকাত নাছির হোছাইনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত নুরুন নবীর ভাতিজা মো. দেলোয়ার হোসেন জয়নিউজকে বলেন, মাসখানেক পূর্বে তার চাচা নুরুন নবী মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন। রোববার তার বিয়ে হয়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ৮-১০ জনের ডাকাতদল তাদের ঘরে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে প্রথম দফায় ব্যর্থ হয়।
পরে ডাকাত দলটি বাড়ির পিছনে রান্নাঘরের দরজা ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ করে। এসময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ডাকাতদলের ছোঁড়া গুলিতে তার চাচা নুরুন নবী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এসময় গুলি এবং ধারালো অস্ত্রের কোপে তার দাদী হাজেরা খাতুন (৮০) ও ছোট চাচা মোজাম্মেল হোসেনও গুরুতর আহত হয়। ডাকাতদল বেশ কিছুক্ষণ তাণ্ডব চালিয়ে পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়।
এদিকে স্থানীয়রা প্রবাসির বাড়িতে ডাকাতির সংবাদটি পুলিশকে জানায়। পরে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল আজমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নুরুন নবীর মরদেহ উদ্ধার করে। একইসঙ্গে আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে পুরো গ্রামের লোকজন। বুধবার সকালে সাপেরগারা এলাকায় তিন ডাকাতকে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে গণধোলাই শুরু করে। এক পর্যায়ে জনতার পিঠুনিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ডাকাত জামাল হোসেন।
এসময় ডাকাত নাছির হোছাইন ও কাউসার গুরুতর আহত হয়। বিক্ষুব্ধ জনতার ডাকাতদের গণধোলাইয়ের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে নিহত ডাকাত জামাল হোসেনের মরদেহ ও আহত দুই ডাকাতকে উদ্ধার করে পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানে আহত দুই ডাকাতের অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক নাছির হোছাইন ও কাউসারকে চমেকে পাঠিয়ে দেন। চমেকে নেওয়ার পথে গণধেলাইয়ের শিকার ডাকাত কাউসার মারা যায়।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল আজম জয়নিউজকে বলেন, মঙ্গলবার ডাকাত দলের গুলিতে প্রবাসী নুরুন নবী নামের এক যুবক নিহত হয়েছিল। এ ঘটনার জেরে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী আজ বুধবার সকালে তিন ডাকাতকে গণধোলাই দিয়েছে। এ ঘটনায় দুই ডাকাত নিহত হয়েছে। অপর এক ডাকাত গুরুতর আহত হয়েছে বলে ওসি জানিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, নিহত প্রবাসীর পরিবার মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।