চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচন ও ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পরাজয়ে হতাশা বিরাজ করছিল বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে। তবে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নগর বিএনপি আয়োজিত মতবিনিময় সভার পর হতাশ সেই নেতা-কর্মীরা চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। কারণ ওই সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে ঘোষণা দিয়েছেন, আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (চসিক) অংশ নেবে বিএনপি।
নগর বিএনপির দাবি, তাদের আহ্বানে ১৫টি থানা ৪৩টি ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীরা ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সেদিনের মতবিনিময় সভাকে জনসভায় পরিণত করেছে। শত বাধা-বিপত্তির পরও বিপুল লোকসমাগমে প্রমাণ হয়েছে, জনগণ বিএনপির সঙ্গেই আছে।
তারা বলছেন, মতবিনিময় সভার এ উদ্দীপনার ধারাবাহিকতায় আসন্ন চসিক নির্বাচন হবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার চলমান মুক্তির আন্দোলন বেগবান করার। তৃণমূল বিএনপির কর্মীরা সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণায় উজ্জীবিত হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা সিটি নির্বাচন ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনের পরজিত হওয়ার পর নগর বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতা নিষ্ক্রিয় ছিলেন।
কিন্তু দলের মহাসচিব সিটি নির্বাচনের অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় চাঙ্গা হয়ে উঠেছে নগর বিএনপি।
মতবিনিময় সভার পর নগর বিএনপি আওতাধীন ১৫টি থানা এবং ৪৩টি ওয়ার্ডে নেতাকর্মীরা সক্রিয় হয়ে উঠছেন। সিটি নির্বাচন নিয়ে কেউ আনুষ্ঠানিক, আবার কেউ অনানুষ্ঠানিক বৈঠকেও মিলিত হচ্ছেন। চলমান আন্দোলন ও আগামী সিটি নির্বাচনের কৌশল নিয়ে মতবিনিময় করছেন। ইতোমধ্যে কেন্দ্র্র থেকে তৃণমূল নেতাদের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য মাঠে নামতে বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। বিশেষ করে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাধ্যমে নিজ নিজ এলাকায় সংগঠনকে শক্তিশালী করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, আমরা সিটি নির্বাচনে অংশ নিলেও সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভোট নিয়ে সংশয় রয়েছে। কমিশনের উদ্যোগেও আস্থার ঘাটতি দেখছি। সেজন্য জয়-পরাজয়কে গুরুত্ব না দিয়ে মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকাকেই আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি।।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামীম জয়নিউজকে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সাজানো মামলায় কারারুদ্ধ করায় সারা দেশের বিএনপি নেতা-কর্মীসহ সাধারণ জনগণ চরম বিক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভের একটি বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে নগর বিএনপি মতবিনিময় সভায়। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে নাছিমন ভবনের মতবিনিময় সভা পরিণত হয়েছে জনসভায়। বিপুল লোকসমাগমের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, জনগণ বিএনপির সঙ্গেই আছে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে এবং গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে নির্বাচনের বিকল্প নেই। তাই আমরা সিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।
নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্কর জয়নিউজকে বলেন, চসিক নির্বাচন শুরুর আগেই পুলিশ নগর বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় শুরু করেছে। কাউন্সিলর প্রার্থীদের ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ওয়ার্ডভিত্তিক তাদের তালিকাও করা হচ্ছে। এসব প্রমাণ করে ভোট সুষ্ঠু হবে না। তবুও গণতন্ত্রের স্বার্থে এবং ম্যাডাম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।