বান্দরবানের জামছড়িতে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতিকে হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে অবস্থান করছে সেনাবাহিনী ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। গুলিবর্ষণের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আহত চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের শক্ত ভীতকে নড়বড়ে করতে ক্ষমতাসীন দলের তৃনমূলের নেতাদের টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে পরিকল্পনা মোতাবেক বান্দরবানের রাজবিলা ইউনিয়নে জামছড়িতে অস্ত্রধারী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের ১০/১২ সদস্য হামলা চালায়। দোকানের ভিতরে ঢুকে গুলি করে হত্যা করে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি বাচুনো মারমাকে (৫৪)।
এসময় পরিস্থিতি সামলাতে দোকানের ভিতরে এবং আশপাশের উপস্থিত স্থানীয়দের উপরও ব্রাশ ফায়ার করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। ঘটনার সময় আতঙ্কে বাখোয়াই মারমা (৬৩) নামে এক বৃদ্ধ স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করে। সন্ত্রাসীদের ব্রাশ ফায়ারে গুলিবিদ্ধ হয় যুবলীগ নেতাসহ আরও পাঁচজন।
গুলিবিদ্ধরা হলেন-যুবলীগ নেতা মংক্যা চিং মারমা (২৫), হ্লামং চিং(৩০), ক্যাপোমং (৪৫), সাবেক ইউপি মেম্বার উচ থোয়াই (৬৫) ও প্রতিবন্ধী আধাসী (২৬)। আহতদের মধ্যে চারজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপরজন বান্দরবান সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে জামছড়ি এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে রেখেছে ব্যবসায়ীরা। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের পাহাড়ি গ্রামগুলোতেও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জয়নিউজকে জানান, নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নিহতদের সৎকার সম্পন্ন করেছে পরিবার। হত্যার ঘটনায় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জড়িত। জলপাই রঙের পোশাক পরিহিত একটি গ্রুপ হামলাটি করেছিল বলে জেনেছি।
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে বান্দরবান শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পরে সকালে এগারটায় বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসলাম বেবী, আওয়ামী লীগের নেতা আব্দুর রহিম চৌধুরী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, পৌরশাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি অমল কান্তি দাশ ও পৌর কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান।