দুপুর সাড়ে ১১টা। মাকে নিয়ে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ঘর থেকে ব্যাংকে যাওয়ার জন্য বের হচ্ছিল প্রতিবন্ধী নাঈম উদ্দীন (১৮)। উদ্দেশ্য প্রতিবন্ধী ভাতা উত্তোলণ করা। কিন্তু ভাগ্যের একি নির্মম পরিহাস, বের হওয়ার আগে মাকে একটু আসছি বলে বের হয়ে আর প্রাণ নিয়ে সে (নাঈম) ঘরে ফিরতে পারেনি। তাকে পিঠিয়ে নির্মমভাবে দিনে-দুপুরে পিঠিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে এমন অভিযোগ তুলেছে নিহতের বড় ভাই মো. মহিউদ্দিন।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পৌরসভার দক্ষিণ-পূর্ব দেওয়াননগর গ্রামের দারোয়ানের পুকুর প্রকাশ দারানি পুকুর পাড় এলাকায় তাকে পিঠিয়ে হত্যা করা হয়।
প্রতিবন্ধী নাঈম ওই এলাকার আবদুল গণির বাড়ির অটোরিকশাচালক নুরুল ইসলামের ছোট ছেলে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় পুলিশ স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় একই এলাকার মো. সালাউদ্দিন (৩৮) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। সালাউদ্দিন একই এলাকার কালামিয়া সওদাগর বাড়ির মৃত তজু মিয়ার ছেলে বলে জানিয়েছেন হাটহাজারী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. আবুল বশর।
তিনি জানান, রোববার দুপুরে নিহত নাঈম তার মাকে নিয়ে প্রতিবন্ধী ভাড়া উত্তোলণের জন্য বের হচ্ছিল। এ সময় নাঈমের মোবাইলে ফোন আসে। তখন সে তার মাকে একটু আসি বলে ঘর থেকে বের হয়। ঘণ্টাখানেক পরে নিহত নাঈমের পরিবার স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারে সে গুরুতর আহত অবস্থায় দক্ষিণ-পূর্ব দেওয়াননগর গ্রামের দারোয়ানের পুকুর প্রকাশ দারানি পুকুর পাড়ের পাশে জমিতে পড়ে আছে। তার ঘাড়ে, কপালে ও বুকে রক্তাত্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে।
সংবাদ পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরআগে স্থানীয়রা সালাউদ্দিন নামে এক যুবককে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করে থানা পুলিশের কাছে তুলে দেন বলে জানান হাটহাজারী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাজীব শর্মা।
তিনি আরও জানান, ঘটনার খবর পেয়ে আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করি। ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি-না তা আমরা খতিয়ে দেখছি। কি কারণে তাকে হত্যা করা হলো তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তাছাড়া লাশের সুরুতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়।
এদিকে থানা পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত যুবক নিহত নাঈমকে মারার কথা স্বীকার করলেও এলাকাবাসীরা বলছে, সে (আটককৃত সালাউদ্দিন) মানসিক ভারসাম্যহীন।
এছাড়া এঘটনার সময় আরও ২/৩ জন যুবক ছিল বলে এলাকাবাসীর অভিমত।
অন্যদিকে, এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ৯টা) থানায় নিহতের পরিবার অভিযোগ বা মামলা দায়ের করেনি বলে জানা গেছে।