বাংলাদেশের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি র্যঙ্কিং ৯। এই কারণে প্রথম সারির দলগুলোর বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলা হয় না টাইগ্রেসদের। যেমন শীর্ষে থাকা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল এর আগে কখনোই খেলেনি।
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ তাদের প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ করে দেয়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ, এটা ভেবেই বেশ উচ্ছ্বিসিত ছিল সালমা-জাহানারারা।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম সাক্ষাতেই বাংলাদেশ হার মেনেছে ৮৬ রানের ব্যবধানে। যা চলতি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে জয়। আর এই জয়ে ‘এ’ গ্রুপ থেকে সেমিফাইনালের পথে কিছুটা এগিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া। আর বাংলাদেশ গেছে পিছিয়ে। বাংলাদেশের শেষ দুটি ম্যাচ নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
ক্যানবেরার মানুকা ওভালে অস্ট্রেলিয়া টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। দুই উদ্বোধনী ব্যাটার আলিসা হিলি ও বেথ মুনি শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ব্যাট করতে থাকেন। ১১টি চার ও ৩ ছক্কায় তারা ১০ ওভারেই তুলে ফেলেন ৯৬ রান। হিলি ২৬ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের একাদশতম ফিফটি।
একের পর এক ক্যাচ মিস করে তাদের আরো বিধ্বংসী হওয়ার সুযোগ করে দেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। তাতে ১৭ ওভারেই তারা দুজন তুলে ফেলে ১৫১ রান। যা অস্ট্রেলিয়ার নারী ক্রিকেট ইতিহাসে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি।
এই রানে হিলিকে ফেরান সালমা খাতুন। ৫৩ বল খেলে ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৩ রান করে যান তিনি। যা নারী বিশ্বকাপে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। হিলিকে ফেরানো গেলেও মুনিকে ফেরানো যায়নি। তিনি ৫৮ বল খেলে ৯ চারে ৮১ রানে অপরাজিত থাকেন। তার সঙ্গে ৯ বল খেলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২২ রানে অপরাজিত থাকেন অ্যাশলে গার্ডনার। তাতে ১ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করে অস্ট্রেলিয়া। যা নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।
১৯০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ার বোলিং তোপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। পেসারসা শর্ট বল দিয়ে দিশেহারা করে ফেলেন বাংলাদেশের ব্যাটারদের। তাতে ২৬ রান তুলতেই হারিয়ে বসে ৩ উইকেট। সেখান থেকে ফারজানা হক ও নিগার সুলাতা ৫০ রানের জুটি গড়ে পরাজয়ের ব্যবধান কমান। ৭৬ রানে সুলতানা ১৯ রান করে ফিরে যাওয়ার পর আবার নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে শুরু করে টাইগ্রেসরা।
৯৫ রানে পঞ্চম, ১০০ রানে ষষ্ঠ, ১০২ রানে সপ্তম, ১০২ রানে অষ্টম ও ১০২ রানে নবম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
ব্যাট হাতে বাংলাদেশের ফারজানা হক সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন। ১৯ রান করেন নিগার সুলতানা। আর ১৩টি করে রান করেন শামীমা সুলতানা ও রুমানা আহমেদ। বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার মেগান শট ৩টি উইকেট নেন। ২টি উইকেট নেন জেস জোনাসেন।
ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন ব্যাট হাতে ঝড় তোলা আলিসা হিলি। উইকেটের পেছনে তিনি দুটি ক্যাচ নেওয়ার পাশাপাশি সালমা খাতুনকে রান আউটও করেন।