ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের দখলে চট্টগ্রাম কলেজ

শিবির ও অছাত্রদের নিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ তুলে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবি উঠেছে। নতুন কমিটির নেতারা কমিটি গঠনের ৪৮ ঘণ্টায়ও কলেজে অবস্থান নিতে পারেনি। এমনকি কলেজে যেতে পারেননি নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। বুধবার (১৯ সেপ্টম্বর) সারাদিন কলেজজুড়ে অবস্থান ছিল পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের।

- Advertisement -

চকবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফ হোসেন জয়নিউজকে বলেন, কলেজের ভেতরে পদবঞ্চিতরা  বিক্ষোভ করেছে। এরপর তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গুলজার মোড়ের দিকে যায়। সেখান থেকে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। পরে তারা গণি বেকারির দিকে মিছিল নিয়ে চলে যায়।

- Advertisement -google news follower

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকাল ১১টা থেকে চট্টগ্রাম কলেজের পদবঞ্চিত নেতারা দফায় দফায় মিছিল করতে থাকে। তারা মিছিল নিয়ে গুলজার মোড় ও গণিবেকারি এলাকায় শোডাউন করতে থাকে। দুপুর ১টার দিকে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজের কয়েকজন অনুসারী কলেজে প্রবেশ করতে চায়। এ সময় পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের তোপের মুখে তারা কলেজে প্রবেশ করতে পারেনি। এরপর কাজেম আলী স্কুলের সামনে থেকে পদবঞ্চিতদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ উঠে। এ সময় ককটেলের বিস্ফোরণও ঘটানো হয়।

পরে দুপুর ২টার দিকে আবারও বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে চকবাজার গুলজার মোড়ের দিকে যায় পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।  মিছিলটি মোড় ঘুরে চট্টগ্রাম কলেজের দিকে ফিরে আসে।

- Advertisement -islamibank

মঙ্গলবার থেকে বুধবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত কলেজে নতুন কমিটির সভাপতি মাহমুদুল করিম ও সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজের নেতৃত্বে কোনো অবস্থান নিতে পারেনি ছাত্রলীগ। পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরাই চট্টগ্রাম কলেজসহ আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেয়।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কলেজের কমিটির পদত্যাগকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বেলাল বলেন, শিবির ও অছাত্রদের নিয়ে গঠিত এ কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কলেজে কোনো অবস্থান নেই তা গত দুই দিনে প্রমাণ হয়েছে। আমাদের সঙ্গে চট্টগ্রাম কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা যোগ দিয়েছে। তারা শিবির দিয়ে গঠিত ছাত্রলীগের কমিটিকে মেনে নেবে না।

মো. বেলাল আরও বলেন, আমরা যখন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি তখন তারা আমাদের প্রতি গুলি ছুড়ে। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। কিন্তু ছাত্রদের প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যায়।

চকবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফ হোসেন আরও বলেন, কলেজের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেনি। গণি বেকারির দিকে হলে হতে পারে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি মাহমুদুল করিম বলেন, কলেজের যারা এখন অবস্থান নিয়েছে তাদের মধ্যে শুধুমাত্র ১০-১২ জন কলেজের ছাত্র। বাকিরা সবাই বহিরাগত। কলেজের পোশাক পড়ে বহিরাগতরা ও অছাত্ররা অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কমিটি গঠন হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন নেতার সঙ্গে আমরা সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এখনো কলেজে আমরা যেতে পারিনি। প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ শান্ত রাখা আমাদের দায়িত্ব। তবে কলেজে অবস্থান নিতে আমাদের বেশিক্ষণ সময় লাগবে না।

উল্লেখ্য, সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের ২৫ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেন নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর। কমিটিতে মাহমুদুল করিমকে সভাপতি এবং সুভাষ মল্লিক সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। তাৎক্ষণিক এ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারীরা। শিবির কর্মী, অছাত্র ও বহিরাগতদের দিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

নগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে যখন দল ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছে ঠিক তখনই আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের না জানিয়ে চট্টগ্রাম কলেজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করা কারও কাম্য ছিল না। যে সাংগঠনিক কাজ করলে বিশৃঙ্খলার সুযোগ থেকে যায়, সে কাজ নির্বাচনের আগে করা সংগঠনের চেতনা পরিপন্থী।

 

জয়নিউজ/শহীদ

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM