ছোট খাটাশ। যদিও এ প্রাণীটিকে স্থানীয় মানুষ ‘বাঘডাশ’নামে বেশি চিনে। প্রাণিকুলে এরা হচ্ছে ভিভেরিডি পরিবারের ভিভেরিকুলা গণের একটি গন্ধগোকুল জাতীয় প্রাণি। আগের মতো এখন আর তেমন দেখা যায় না এ প্রাণীর। তাই বিলুপ্তির পথে এ প্রাণীকে দেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতি সংরক্ষিত।
মঙ্গলবার (৩ মার্চ) রাতে এমনি একটি বিপন্ন প্রজাতির ছোট খাটাশ এর দেখা মিলল গহিরার কাজী পাড়া এলাকার রাইতুল ইজ্জাত জামে মসজিদে। রাত ৮টার দিকে এশার নামাজ পড়তে যাওয়া এক মুসল্লি প্রাণিটিকে প্রথমে দেখতে পান।
প্রত্যক্ষদর্শী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মো. সাইফুল হক জানান, আড়াই ফুটের মতো দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ৩ কেজি ওজনের এ প্রাণীটিকে দেখতে দেখতে পায়। তবে ওই প্রাণিটাকে দেখে অনেকটা ক্ষুধার্ত বলে মনে হচ্ছিল। কয়েকজন কিশোর জাল দিয়ে আটক করে মারার জন্য উদ্যত হয়। পরে আমরা কয়েকজন তাদের হাত থেকে প্রাণীটিকে রক্ষা করে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল কিবরিয়া জয়নিউজকে বলেন, ছোট খাটাশ একটি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী। এ ধরণের খাটাশ ‘গন্ধগোকুল’ নামেও পরিচিত হলেও চট্টগ্রামের মানুষের কাছে বাঘডাশ নামে চিনে। এরা গাছে চড়তে ওস্তাদ। মাটিতেও সমান সচল এবং অল্প জায়গায় আত্মগোপনে পারদর্শী। ওজন তিন থেকে পাঁচ কেজি। শরীরের মাপ লেজ বাদে ৯০ থেকে ৯৩ সেন্টিমিটার, লেজ ৩০ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। নিরীহ স্বভাবের এ প্রাণিটি বাঁশবন-ঘাসবন, শুকনো কাশবন, জালিবেতঝাড়, ইটের পাঁজা ও ঝোপঝাড় হচ্ছে খাটাশের আবাসস্থল।
তিনি আরো জানান, প্রায় সব ধরনের ফল, বিভিন্ন ছোট প্রাণী ও পতঙ্গ, তাল-খেজুরের রস ইত্যাদি তাদের বেশ পছন্দের খাবার।তবে তারা গাছে উঠতে পারলেও মাটিতেই শিকার ধরে এবং ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, ছোট পাখি, টিকটিকি, কীটপতঙ্গ ও সেগুলির লার্ভা খেয়ে থাকে। গৃহস্থের হাঁস-মুরগিও চুরি করে। দেশভেদে এদের খাবারের তারতম্য দেখা যায়। কফি এদের অন্যতম প্রিয় একটি খাদ্য।
জয়নিউজ/আবু তালেব/পিডি