কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় পাউবোর বেড়িবাঁধের ব্লক তৈরিতে সাগরের লবণাক্ত বালি আর নিম্নমানের পাথর ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে দ্বীপের জনপ্রতিনিধি ও সচেতনমহল।
দ্বীপের একাধিক জনপ্রতিনিধি জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপের ৭১ পোল্ডারের ৪০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে ১৪ কিলোমিটার বাঁধ মেরামত সিসি ব্লক ও মাটির কাজ করার জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় প্রায় ৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন।
২০১৮-১৯ অর্থ বছর পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে টাকা ছাড় দিলেও ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষ যোগসাজশে সাগরের লবণবালি আর অত্যন্ত নিম্নমানের পাথর ব্যবহার করে ব্লক তৈরি করা হয়েছে। আর এসব নিম্নমানের ব্লক বাঁধে বসানোর জন্য এখন তোড়জোড় শুরু করেছে পাউবো ও ঠিকাদারের লোকজন!
৫ মার্চ দুপুরে কুতুবদিয়ার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের জেলেপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ঠিকাদারের লোকজন নিম্নমানের পাথর ও লবণ বালি ব্যবহার করে ব্লক তৈরি করছে। এছাড়া তৈরিকৃত ব্লকে পানিও দেওয়া হচ্ছে না। ব্লক তৈরির সময় পাউবোর কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার নিয়ম থাকলেও এসময় কাউকে দেখা যায়নি।
উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুচ ছাফা জয়নিউজকে অভিযোগ করে বলেন, পাউবোর বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য ব্লক সাগরের লবণবালি আর নিম্নমানের পাথর দিয়ে তৈরি হচ্ছে। এসব ব্লক বাঁধে ব্যবহার করতে গিয়ে তা ভেঙে যাচ্ছে। লবণবালি আর নিম্নমানের পাথর ব্যবহার না করার জন্য বলা হলেও পাউবো ও ঠিকাদার তা মানছে না।
এ প্রসঙ্গে বাঁধ মেরামত বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ঈগলরীজ ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন (বিডি) লিমিটেডের সাইট ইঞ্জিনিয়ার শাহীন জয়নিউজকে বলেন, কাজের গুণগতমান শতভাগ বজায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি প্রকল্প সাইট এলাকায় এসেছি এক সপ্তাহ হচ্ছে। যে পাথর নিয়ে ব্লক তৈরির অভিযোগ উঠেছে সেই পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।
কুতুবদিয়া আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের জেলেপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জহরলাল জলদাশ জয়নিউজকে বলেন, প্রায় এক যুগ ধরে জেলেপাড়া এলাকায় বেড়িবাঁধ ভাঙা থাকায় জোয়ারে শত শত পরিবার ভিটেবাড়ি হারিয়েছে। বাঁধ মেরামতের কাজ হচ্ছে দেখে এলাকাবাসী আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু পাউবো ও ঠিকাদার ব্লক তৈরিতে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় আমাদের সেই আশায় গুড়েবালি!
বান্দরবান জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাছান জয়নিউজকে বলেন, কুতুবদিয়ার ৭১ পোল্ডারে ভাঙন বাঁধ মেরামত কাজ ৪০ ভাগ শেষ হয়েছে। আগামী জুনের আগে প্রাক্কলিত বাকি কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ব্লক নির্মাণ কাজে নিম্নমানের পাথর আর লবণবালি ব্যবহারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ ফেব্রুয়ারি কুতুবদিয়ায় সরেজমিন পরিদর্শন গিয়ে এর সত্যতা পাই। পরে নিম্নমানের পাথর ও লবণবালি ব্যবহার না করার জন্য ঠিকাদারের লোকজনকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি।