স্বাগতিকদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রথমে ব্যাটিং করা জিম্বাবুয়েকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়তে দেয়নি টাইগাররা। এদিন ব্যাট হাতেও সফরকারীদের শাসন করেছে স্বাগতিকরা। দুই বিভাগের দৃঢ়তায় হেসেখেলে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে নয় উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট ব্যবধানের জয়। এর আগে সর্বোচ্চ উইকেট ব্যবধানের জয় ছিল চার উইকেটে। এছাড়া ম্যাচটির মাধ্যমে আরেকটি দারুণ ইতিহাস গড়ল স্বাগতিকরা। এই প্রথম কোনো দলের বিপক্ষে একেবারে তিন ফরম্যাটে জয়ের রেকর্ড গড়ল লাল-সবুজের দল।
বুধবার (১১ মার্চ) মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১১৯ রান করেছে জিম্বাবুয়ে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৯ রান করেন ব্রেন্ডন টেইলর।
১২০ রানের ছোট লক্ষ্যের জবাবে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। তরুণ ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও লিটন দাস শুরুটা বেশ সাবধানে করেন। প্রথম ওভারে দুজনে নেন মাত্র ৪ রান। এরপরই ছন্দ ধরে খেলেন লিটন। মেরে খেলেন নাঈমও। তবে ৩৩ রান করে সাজঘরে ফিরেন তিনি।
নাঈম ফিরে গেলেও টিকে ছিলেন লিটন দাস। ছন্দে থাকা লিটন ৩৫ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। এরপর শেষ পর্যন্ত ১৫.৫ ওভারে ৬০ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন সৌম্য সরকার।
বাংলাদেশ: ১৫.৫ ওভারে ১২০/১ (নাঈম ৩৩, সৌম্য ২০, লিটন ৬০; এমপোফু ৩.৫-০-২৭-১)
এর আগে টস জিতে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় সফরকারীরা। দলীয় ১২ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙেন আল-আমিন হোসেন। ২.৩ ওভারে আল-আমিনের বল স্কুপ করতে চেয়েছিলেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার টিনাশে। কিন্তু টাইমিং ঠিক হয়নি। ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। ১০ বলে ১০ রান করেন তিনি।
শুরুর ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ক্রেইগ আরভিন ও ব্রেন্ডন টেইলর। বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান তাঁরা। নিজের কোটার প্রথম ওভারেই সেই জুটি ভাঙেন আফিফ। বল হাতে নিজের প্রথম বলেই ফিরিয়ে দেন ক্রেইগ আরভিনকে। তাতে ভাঙে ৫৭ রানের জুটি, আরভিন ফেরেন ২৯ রানে।
অধিনায়ক উইলিয়ামসনকে থিতু হতে দেননি মেহেদী হাসান। তরুণ এই তারকার বলে মুস্তাফিজের হাতে ক্যাচ দিয়ে তিন রানে ফেরেন অতিথি অধিনায়ক। টিকতে পারেননি সিকান্দার রাজাও। ১২ রানে তাঁকে সাজঘরে পাঠান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বড় লক্ষ্য গড়তে পারেনি জিম্বাবুয়ে। টেইলরের দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভারে স্কোরবোর্ডে ১১৯ রান তোলে জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে দুটি করে উইকেট নেন আল-আমিন ও মুস্তাফিজ। একটি করে নেন সাইফউদ্দিন, মেহেদী ও আফিফ। তবে অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ কোনো উইকেট পাননি। চার ওভারে ২৫ রান দিয়েছেন তিনি।
এর আগে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়েকে ৪৮ রানে হারায় বাংলাদেশ। যেটা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্বাগতিকদের সেরা জয়। এছাড়া এই ফরম্যাটে নিজেদের চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে জয়।
তার আগে ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। একমাত্র টেস্টেও অতিথিদের ইনিংস ব্যবধানে হারিয়েছে লাল-সবুজের দল।
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১১৯/৭ (টেইলর ৫৯, সিকান্দার ১২, আরভিন ২৯; আল আমিন ৪-০-২২-২, মুস্তাফিজ ৪-০-২৫-২)