ভারতের নয়াদিল্লিতে বহুল আলোচিত মেডিকেল ছাত্রী নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যায় অভিযুক্ত চার আসামি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
শুক্রবার (২০ মার্চ) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৫টায় তিহার জেলে এ দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
কলকাতা টুয়েন্টিফোরের খবরে বলা হয়েছে- ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন নির্ভয়ার মা। তবুও দেরিতে হলেও বিচার পাওয়াতে খুশি তিনি।
বহুল আলোচিত এ ফাঁসি ঘিরে তিহার জেলের বাইরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয় জেলের বাইরে। কিন্তু নিরাপত্তা উপেক্ষা করেই জেলের বাইরে প্রচুর মানুষের ভিড় করে। গোটা তিহার জেল লক-ডাউন করে দেয়া হয়।
যাদের ফাঁসি কার্যকর করা হলো তারা হলেন- অক্ষয় ঠাকুর (৩১), পবনগুপ্ত (২৫), বিনয় শর্মা (২৬) ও মুকেশ সিং (৩২)। নির্ভয়া হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি বাসচালক রাম সিং কারাগারে বন্দি অবস্থায় মারা যান।
ফাঁসির হাত থেকে বাঁচতে শেষ মুহূর্তে এসে সবধরনের চেষ্টা চালিয়েছেন নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের চার অপরাধী।
কিন্তু গত ১৭ জানুয়ারি নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যায় অভিযুক্ত চার আসামির সর্বোচ্চ সাজা কার্যকরের নতুন সময় ঘোষণা করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লির তিহার কারাগারে অভিযুক্তদের সাজা কার্যকর হবে আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। এর আগে দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছিলেন, নির্ভয়া ধর্ষণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত বিনয় শর্মা, মুকেশ কুমার, অক্ষয় কুমার সিং এবং পবন গুপ্তকে ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টায় তিহার কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। কিন্তু আসামিরা একজন একজন করে প্রাণভিক্ষার আবেদন করায় সেটি কয়েক দফায় পিছিয়ে যায়।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর দিল্লির একটি হলে সিনেমা দেখে বন্ধুর সঙ্গে বাসে ফিরছিলেন প্যারামেডিকেলের ওই ছাত্রী। ওই বাসে যাত্রী কম ছিল। একপর্যায়ে বাসচালক-সহকারীসহ অন্তত ৬ জন মিলে নির্ভয়ার বন্ধুকে পিটিয়ে হাত-পা বেঁধে বাসের পেছনের দিকে ফেলে রেখে মেয়েটিকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে দুজনকে দিল্লির একটি সড়কের পাশে বাস থেকে ছুড়ে ফেলা হয়।
এ ঘটনায় ভারতজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়। নির্ভয়ার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে দেশটির লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে দিনের পর দিন বিক্ষোভ করতে থাকে।
জয়নিউজ/পিডি
