বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল-নোমান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন বন্ধের দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন।
শুক্রবার (২০ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।
ওই চিঠিতে আবদুল্লাহ আল-নোমান বলেন, সারাবিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করেছে এবং ইতোমধ্যে আমাদের দেশে ও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজন মারা গেছেন। করোনাভাইরাসের কারণে সরকার সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আন্তঃ জেলা বাস সার্ভিস এবং খাবারের দোকান, ওষুধের দোকান ছাড়া, শপিংমলসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসহ আন্তজাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণায়ের পক্ষে থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করে জনসমাগম, মিছিল, সমাবেশ ও গণসংযোগ পরিহার করার জন্য ইসিকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি ইতোমধ্যে সব রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ স্থগিত করেছে এবং করোনাভাইরাস সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার জন্য লিফলেট বিতরণ করছে। এমন অবস্থায় আগামী ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য চসিক নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটারদের মধ্যে ভয়ভীতি কাজ করছে। যেখানে নগরীর অধিকাংশ ভোটার জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না, সেখানে করোনা আতঙ্কের মধ্যে জনসমক্ষে লাইন ধরে ভোটকেন্দ্র আসবে বলে আমাদের মনে হয়না।
তিনি আরো বলেন, মানুষের জীবনের নিরাপত্তার চেয়ে নির্বাচন কখনো বড় হতে পারেনা। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের প্রশাসন সভা-সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠান, বিনোদন কেন্দ্রে উপস্থিতি ও বিভিন্ন স্থানে জনসমাগম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ফলে জনমনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভোটারদের উপস্থিতির মাধ্যমে যেখানে নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশ থাকার কথা সেখানে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের কারণে ভোটারদের অনুপস্থিতিতে এই নির্বাচন হাস্যকর ও প্রহসনে পরিণত হবে। তাই আগামী ২৯ মার্চ চসিক নির্বাচন স্থগিত করা জরুরি।
লিখিত অভিযোগ দিয়ে বের হয়ে মেয়রপ্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রামবাসীকে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত করতে প্রয়োজন হলে নির্বাচন থেকে সরে যেতেও প্রস্তুত আছি। আমাদের কাছে নির্বাচন মুখ্য নয়, মানুষের জীবন আগে। আমাদের দল এবং আমরা জনগণের পক্ষে আছি। জনগণের বিপরীতে গিয়ে আমরা নির্বাচনে যেতে চায় না। জনগণের নিরাপত্তাই বিএনপির জন্য মূখ্য, ক্ষমতায় যাওয়া নয়।
তিনি আরো বলেন, দেশে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। সব কিছুর উপর একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নগরীতে সভা-সমাবেশ ও জমায়েত সব কিছু নিষিদ্ধ করেছে। তাহলে কেন নির্বাচন বন্ধ করা হচ্ছে না? দেশে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। তারপরও কেন সরকার নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত জানি না। দলের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনি প্রচারণা বাদ দিয়ে জনগণকে করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্ক করছি। পাশাপাশি জনগণের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামিম, নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, আনোয়ার হোসেন লিপু ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামরুল ইসলাম প্রমুখ।