বিশ্বজুড়ে মহামারী রূপ নিয়েছে করোনাভাইরাস। ইতোমধ্যে ভাইরাসটি বিশ্বের ১৭৬টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়ে প্রায় আড়াই লাখ মানুষকে আক্রান্ত করেছে। এই পরিস্থিতিতে কিছুটা সুখবর দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সংস্থাটি বলছে, করোনাভাইরাস ঠেকাতে সব মিলিয়ে কমপক্ষে ২০টি ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে। ডব্লিউএইচও এসব প্রকল্পের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখছে। আশা করা হচ্ছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আবিষ্কৃত হবে কোভিড–১৯ প্রতিরোধের ভ্যাকসিন।
সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে নতুন করোনাভাইরাসের ২০টি ভিন্ন ভিন্ন ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে কিছু ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়ে গেছে। এটিও একধরনের রেকর্ড।
এত কম সময়ে আগে কখনো কোনো রোগের ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করা যায়নি। কোভিড–১৯–এর জিন সিকোয়েন্স তৈরির মাত্র ৬০ দিনের মাথায় এসব ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি কর্মসূচির টেকনিক্যাল লিড মারিয়া ভ্যান কেরখোভে বলেন, এই প্রক্রিয়াটি খুব দ্রুত ও নাটকীয়ভাবে এগোচ্ছে। আমাদের যতটুকু সামর্থ্য, তার চেয়েও দ্রুত এগোতে পারছি আমরা। সার্স ও মার্স যখন ছড়িয়েছিল, ওই সময় থেকেই করোনাভাইরাস নিয়ে কাজ শুরু হয়েছিল। সেই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই আমরা এগিয়ে চলেছি। আগের গবেষণা নতুন ভাইরাসের ক্ষেত্রে কাজে লাগছে।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ-ও বলে দিয়েছে যে, জনসাধারণের ব্যবহারের উপযোগী ওষুধ বানাতে আরও অনেক পথ পার হতে হবে। পরীক্ষামূলক প্রয়োগ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য গবেষণা শেষে একটি নিরাপদ ওষুধ তৈরি করতে ১৮ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।
সংস্থাটির জরুরি কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক মাইক রায়ান বলছেন, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। কারণ একটি খারাপ ভাইরাসের তুলনায় একটি খারাপ ভ্যাকসিন বেশি অপকারী।
তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে নতুন করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে বিজ্ঞানীরা ‘অবিশ্বাস্য গতিতে’ এগিয়ে চলেছেন। এটি কখনোই সম্ভব হতো না, যদি না চীন ও অন্যান্য দেশ কোভিড-১৯-এর জিনেটিক সিকোয়েন্স অন্যান্য দেশকে না জানাত।
প্রসঙ্গত, চীনের উহানে গত ডিসেম্বরে নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এরপর তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এ পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।